মৃত সুজাতা মার্ডি (ইনসেটে), শোকাহত পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।
মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের হল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, মহম্মদবাজারের ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েতের হাবড়াপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুজাতা মার্ডির (২২) দেহ উদ্ধার হয় বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের অদূরে পরিত্যক্ত একটি খাদানে। ময়না-তদন্তের জন্য দেহ সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
সুজাতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বছর ছয়েক আগে হিংলো পঞ্চায়েতের কেন্দ্রপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। তাঁদের চার বছরের ছেলে ও দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। দাম্পত্য কলহের কারণে পুজোর আগে বাপের বাড়িতে চলে আসেন সুজাতা। তাঁর মা সারো কিস্কু ও মাসি সরস্বতীর অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকেই সুজাতার সঙ্গে ঝগড়া করত ওর স্বামী কৃষ্ণ মার্ডি। গ্রামসভা বৈঠক ডেকে মীমাংসা করে। বুধবার সন্ধ্যায় ফোনে দু’জনের ঝগড়া হচ্ছিল। আমরা সুজাতাকে ফোন বন্ধ করতে বলেছিলাম। কিন্তু ও শোনেনি।’’ তাঁদের দাবি, রাত ১০টা নাগাদ সুজাতা শৌচালয়ে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে যায়। ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁরা ভেবেছিলেন, সুজাতাকে নিয়ে গিয়েছে কৃষ্ণ। এ দিন সকালে সুজাতার দেহ খাদানে পড়ে থাকার খবর পান তাঁর পরিজনেরা। সুজাতার মায়ের অভিযোগ, ‘‘কৃষ্ণই মেরে ফেলেছে মেয়েকে। ওর শাস্তি চাই। কৃষ্ণের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
মৃতার প্রতিবেশী সুকুমার সাহা বলেন, ‘‘সকালে জানতে পারি খাদানে একটি দেহ পড়ে রয়েছে। গিয়ে দেখি দেহটি সুজাতার। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সুজাতা। ওর মাসি বলেছে, সুজাতা বেরোনোর পরে মোটরবাইকের আওয়াজও শোনা গিয়েছিল। আমাদের সন্দেহ, সুজাতাকে খাদানে ফেলে দিয়েছে ওর স্বামীই। দেহ যেখানে পড়েছিল, সেখানে ধস্তাধস্তিরও চিহ্ন দেখা গিয়েছে। সুজাতার স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হত।’’
কৃষ্ণের মা বাহামণি মার্ডি অবশ্য সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বৌমা পুজোর আগে বাপের বাড়ি যায়। বাড়িতে কোনও অশান্তি হত না। আমার ছেলে এখানেই ছিল। কী করে এমন ঘটনা ঘটল আমাদের জানা নেই। ওরা ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। ঘটনার সঙ্গে ছেলের কোনও যোগ নেই।’’ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।