নির্যাতিত পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় ৫ বছর আগে মাকে ডাইনি অপবাদ দেওয়ায় ঘরছাড়া হতে হয়েছিল পরিবারকে। এর পর আবার গ্রামে ফিরে আসার পর ডাইনি অপবাদ জুটল স্ত্রীর ভাগ্যেও। অপবাদের জেরে ব্যাপক অত্যাচারের মুখোমুখি পুরুলিয়া পুরসভার খেজুরি ডাঙার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রঞ্জিত মোদকের পরিবার। এমনকি ডাইনি অপবাদের জেরে অ্যাসিড ছুঁড়েও মারা হয় রঞ্জিতের স্ত্রীর গায়ে। নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন রঞ্জিত। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই বানেশ্বর রাজোয়াড় নামে এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করে। তবে এখনও ফেরার রয়েছেন বানেশ্বরের দাদা প্রদীপ রাজোয়াড়। পুলিশ তাঁর সন্ধান করছে বলেও জানা গেছে।
পাঁচ বছর আগে রঞ্জিতের মাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে পুরো পরিবারকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। এমনকি মাথাও মুণ্ডন করতে হয়েছিল রঞ্জিতের পরিবারকে।
তবে অভিযোগের ভিত্তিতে অত্যাচারিত পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এই পরিবারের সুরক্ষার জন্য চার জন সিভিক কর্মীকেও মোতায়েন করা হয়েছে।এছা়ড়াও সময়ে সময়ে পাহারা দিচ্ছে পুলিশের ভ্যানও। তবে তাতেও ভয় কাটছে না নির্যাতিত পরিবারের।
সোমবার সন্ধেবেলাতেও পরিবারের সদস্যদের গিয়ে আশ্বস্ত করেন পুরুলিয়া জেলার বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায়, পুরুলিয়া পৌরসভার পৌর প্রশাসক নবেন্দু মাহালি ও পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। এই বিষয়ে নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘শিক্ষার অভাব রয়ে গেছে। একই সঙ্গে সরকারি প্রচারেরও ঘাটতি রয়েছে। সমাজ কল্যাণ দফতর সেই অর্থে সচেষ্ট নয়।’’
পুরুলিয়ার সদর মহকুমা শাসক বিমলেন্দু দাসও বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। আমরা জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের মাধ্যমে প্রচার অভিযান চালাব।’’