বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু অপারেশন থিয়েটার। নিজস্ব চিত্র
শৌচালয় থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে অপারেশন থিয়েটারে। সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকায় ঝুঁকি এড়াতে চোখের অস্ত্রোপচার বন্ধ রেখেছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফলে, ভোগান্তিতে পড়েছেন দূর থেকে আসা রোগীরা।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “অপারেশন থিয়েটার মেরামতি শুরু হয়েছে। শীঘ্রই অস্ত্রোপচার চালু হবে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বন্ধ রয়েছে চক্ষু অস্ত্রোপচার। কারণ, চোখের অস্ত্রোপচার যে বিভাগে হয়, ঠিক তার উপরেই রয়েছে কার্ডিওলজি বিভাগের শৌচালয়। সেখান থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে নীচে।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের চক্ষুবিভাগে রোগীর চাপ অন্য অনেক সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেশি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বছরে গড়ে ৩,৬০০ অস্ত্রোপচার হয় চক্ষু বিভাগে। বহির্বিভাগে দৈনিক গড়ে অন্তত ৩০০ রোগীর চিকিৎসা হয়। প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও রোগীরাও এখানে আসেন। হাসপাতালে চোখের অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। বহির্বিভাগে চিকিৎসার পরে, বহু রোগীকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়া, তাঁদের কাছে কোনও গতি নেই।
মেদিনীপুরের বৃদ্ধা তারারানি ভট্টাচার্যের চোখে ছানি ধরা পড়েছে। সম্প্রতি তিনি বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করিয়েছেন। তাঁকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তারারানিদেবী বলেন, “বাঁকুড়া মেডিক্যাল আমাদের বড় ভরসা। ছানি অপারেশন করাতে হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু অপারেশন বন্ধ থাকায় মুশকিলে পড়েছি।” একই অবস্থা বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের বাসিন্দা অশ্বিনী মহন্তের। তাঁর বক্তব্য, “অন্য জায়গায় অস্ত্রোপচার করানোর খরচ জোগাড় করতে পারব না। এই হাসপাতালই আমার ভরসা। কিন্তু এখানে এসে জানতে পারলাম, এখন অস্ত্রোপচার হচ্ছে না।”
রোগীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন সে জন্য চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকেরা নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের। চক্ষু বিভাগের প্রধান বিশ্বরূপ রায় বলেন, “অনেক দূর থেকে রোগীরা এখানে আসেন। অস্ত্রোপচার কবে চালু হবে তা তাঁদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। তাই আমাদের ফোন করে হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিচ্ছি রোগীদের।” তাঁর আশা, দুই সপ্তাহের মধ্যে ফের অস্ত্রপচার চালু হবে।
অধ্যক্ষ বলেন, “রোগীদের সমস্যার কথা ভেবে দ্রুত কাজ হচ্ছে। ছোট অস্ত্রোপচার অন্যত্র করা হচ্ছে। কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকির জন্যই বড় অস্ত্রপচার বন্ধ রাখতে হয়েছে।”