ধৃত সুমন্ত মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আদালতে। — নিজস্ব চিত্র।
ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে মাকে হাতুড়ি এবং ছুরির আঘাতে খুনের অভিযোগ উঠল প্রাক্তন সিআইএসএফ-কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনা বাঁকুড়ার ছাতনা এলাকার। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে ছাতনা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বাঁকুড়ার ছাতনা থানার চণ্ডীদাস পল্লি এলাকায় একমাত্র ছেলে সুমন্ত মণ্ডলকে নিয়ে বসবাস করতেন স্বপন মণ্ডল এবং বন্দনা মণ্ডল। সুমন্ত সিআইএসএফ-এর কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। তবে বছর খানেক আগে কোনও এক কারণে সুমন্ত কাজ ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। ছেলে চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় এ নিয়ে পরিবারে অশান্তিও হত।
শনিবার সন্ধ্যায় সুমন্তের বাবা স্বপন বাজারে যান। সেই সময় মায়ের উপর সুমন্ত হাতুড়ি এবং ছুরি নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। রাতে স্বপন বাড়ি ফিরে দেখেন ভিতর থেকে বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ। তাতে তাঁর সন্দেহ হয়। এর পর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের সাহায্য নিয়ে পুলিশকে ডাকেন তিনি। পুলিশকর্মীরা জানালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে দেখতে পান বন্দনা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেয় পড়ে আছেন। মায়ের মৃতদেহের পাশেই একটি চেয়ারে হাতে হাতুড়ি এবং ছুরি নিয়ে বসে রয়েছেন সুমন্ত। পুলিশ সুমন্তকে গ্রেফতার করেছে। বন্দনার দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। রবিবার সুমন্তকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হয়। তাঁকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ছেলের ‘কীর্তি’ নিয়ে স্বপন বলেন, ‘‘আমার ছেলে আমার স্ত্রীকে নৃশংস ভাবে খুন করেছে। আমার ছেলের উচ্চাকাঙ্ক্ষাই এর জন্য দায়ী। আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে ছেলে মাঝেমধ্যেই মারধর করত। আমি চাই আমার ছেলের ফাঁসি হোক।’’
রবিবার আদালতে পেশের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিযুক্ত সুমন্ত বলেন, ‘‘এর পিছনে ৮-১০ বছরের ঘটনা আছে। আগামিদিনে সব জানতে পারবেন।’’
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান, মায়ের সঙ্গে বচসার জেরে মেজাজ হারিয়ে ওই যুবক খুন করেছে। তদন্ত চলছে।’’