প্রতীকী ছবি।
পুজো হচ্ছে নমো নমো করে। তাই মন ভার কীর্ণাহার তথা নানুর থানা এলাকার বাসিন্দাদের।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নানুর থানা এলাকায় সব মিলিয়ে ৩৫০টি পুজো হয়। তার মধ্যে কীর্ণাহার ১ এবং ২ পঞ্চায়েত এলাকায় পুজোর সংখ্যা ৫০টি। কীর্ণাহারেই থিম পুজোর রমরমা। তাই নানুরের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই লাগোয়া লাভপুর, মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমান জেলার মানুষের ঢল নামে কীর্ণাহারে। এ বারে বাদ সেধেছে করোনা। বাজেটে ছেঁটে কোন রকমে নমো নমো করে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিকাংশ কমিটি। তাই মন খারাপ এলাকার বাসিন্দাদের।
অন্যবার ষষ্ঠীর দিন থেকেই কীর্ণাহার জমজমাট হয়ে ওঠে। ওই দিন মিরিটি গ্রামের বাড়িতে পুজোয় যোগ দিতে আসতেন সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সময় থেকেই কপ্টারে প্রণববাবু আসতেন। তা দেখতে ভিড় করে আসতে আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ। রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরেও তাঁকে নিয়ে আসত বিরাট কনভয়। তাঁকে দেখার জন্য ভিড় কম হত না। এ বারে আর সেই কনভয় আসবে না। অন্য অধিকাংশ পুজোও হচ্ছে এ বারে নিয়ম রক্ষার্থে।
কীর্ণাহারে বড় পুজোর অন্যতম মরসুমি ক্লাব পরিচালিত পশ্চিমপট্টি সর্বজনীন দুর্গোৎসব। ২০১২ সালে প্রণববাবু যেবার রাষ্ট্রপতি হন সেবারই ওই ক্লাবে থিম পুজোর প্রচলন হয়। সেবারে রাষ্ট্রপতি ভবনের থিম করে সাড়া ফেলে দেন তারা। গত বছর তাদের পুজোর বাজেট ছিল ৩ লক্ষ টাকা। এ বারে বাজেট ধার্য হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। সম্পাদক সৌমেন চট্টোপাধ্যায় জানান, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই বক্তব্য অন্য পুজোগুলির উদ্যোক্তাদেরও। কীর্ণাহার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক দীনেশ ভট্টাচার্যেরও। গতবার তাদের বাজেট ছিল ৩ লক্ষ টাকা। এ বারে করা হয়েছে ২ লক্ষ। বাজেট কমেছে ইয়ুথ ক্লাব পরিচালিত পূর্বপট্টি সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবং ইয়ংস্টার ক্লাবেও। ইয়ুথ ক্লাবের সম্পাদক মলয়কুমার সিংহ এবং ইয়ংস্টারের সম্পাদক স্বপন মজুমদার বলেন, ‘‘প্রতি বছরই আমরা নিত্যনতুন থিমের পাশাপাশি পংক্তি ভোজন-সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়জন করে থাকি। এ বারে কম আয়োজনে পুজোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
মন খারাপ নানুরের কুহেলি মুস্তাফি, ফুটিসাঁকোর বন্দনা মাঝিদের। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রতি বছরই আমরা কীর্ণাহারে পুজো দেখতে যাই। ভেবেছিলাম এ বারও হয়তো পুজোয় বন্দিদশা কিছুটা কাটবে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে তা আর হচ্ছে কই? তাই মন খারাপ।’’