এখনও মাটির প্রলেপ পড়েনি অনেক কাঠামোয়। নিজস্ব চিত্র
মহালয়ার দিন শুরু হয় দুর্গা প্রতিমার চোখ আঁকার কাজ। করোনা আবহে বরাত কম। এ বছর তাই চোখ আঁকাও হয়নি প্রতিমার। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে মহম্মদবাজারের সূত্রধর পরিবার।মহম্মদবাজার ব্লকের কুমোরটুলি বলতে এক ডাকে সকলেই চেনেন রঘুনাথপুর গ্রামের সূত্রধর পরিবারকে। শুধু মহম্মদবাজার নয় সিউড়ি, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট, বোলপুর, এমনকি ইলামবাজার পর্যন্ত এই কুমোরটুলিকে সকলেই চেনেন। প্রতি বছরই মহালয়ার দিন অর্থাৎ দেবীপক্ষের সূচনার দিনে দেবীর চোখ আঁকা হয় এবং শুরু হয় প্রতিমা রং করার কাজ। এ বছর করোনা পাল্টে দিয়েছে পুজোর আগের চেনা পরিস্থিতিটা।অন্য বছর রঘুনাথপুরের এই কুমোরটুলিতে এই সময় মৃৎশিল্পীরা কথা বলার সময় পেতেন না। এমনকি বাড়ির মহিলারাও সকালে নিজেদের বাড়ির কাজ শেষ করে লেগে পড়তেন দুর্গাপ্রতিমা সাজানোর কাজে। কিন্তু এখন কুমোরটুলিতে গেলেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে শুধুমাত্র খড়ের কাঠামো পড়ে রয়েছে। সেটাও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। এখনও শেষ হয়নি মাটির কাজ। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন সূত্রধর পরিবারের মৃৎশিল্পীরা।
মৃৎশিল্পী অশোক সূত্রধর, গৌড় সূত্রধর ও নিতাই সূত্রধর বলেন, ‘‘করোনার জেরে এ বছর কারও কাজ নেই। মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে অর্থসঙ্কট। তাই আমাদের কাজও অনেক কম। অন্য বছর ৬০টিরও বেশি প্রতিমা বানানোর কাজ করেছি। এ বছর তা কমে ৪৫টি।’’ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, আগের বছরের তুলনায় এই বছর দামের পার্থক্যও অনেক। আগের বছর যে সমস্ত প্রতিমার দাম ছিল ১৭ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা। এবছর তা নেমে এসেছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। আগের তুলনায় প্রতিমা এ বছর অনেক ছোট হচ্ছে।শিল্পীরা বলছেন, ‘‘শুধুমাত্র নিয়মরক্ষায় ছোট মূর্তি বানিয়ে সমস্ত পুজো কমিটি এ বছরের পুজো সারতে চাইছেন। দুর্গাপুজোর সময় আমাদের সারা বছরের খরচ উঠে আসতো। কিন্তু এ বছর অর্ধেকেরও নীচে নেমে গেছে পুজো থেকে আয়। যা অবস্থা তাতে প্রতিমা করার পাশাপাশি অন্য কাজের সন্ধান করতে হবে আমাদের।’’