পর্যটকদের অপেক্ষায়। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
খড় বদলে হয়েছে টিনের চাল। পড়েছে রঙের পোচ। এই শীতে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের ‘দুয়ারসিনি প্রকৃতিভ্রমণ কেন্দ্র’ নতুন করে চালু করতে চাইছে বন দফতর। রবিবার ডিএফও (কংসাবতী দক্ষিণ) অর্ণব সেনগুপ্তকে নিয়ে কাজ দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম চক্রের মুখ্য বনপাল সৌরভ চৌধুরী। তিনি বলেন, “নতুন করে কিছু কাজ চলছে। শেষ হলেই কটেজগুলি চালু করা হবে।”
এক সময়ে পুরুলিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ছিল বান্দোয়ানের দুয়ারসিনি। ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন উন্নয়ন নিগম সেখানে তিনটি কটেজ বানিয়েছিল। গালুডি, ঘাটশিলা বা পুরুলিয়া থেকে বাসে বান্দোয়ান। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে দুয়ারিসিনি যেতেন প্রচুর পর্যটক।
২০০৩ সালের অক্টোবরে দুয়ারসিনির কাছে মাওবাদী হামলায় প্রাণ হারান বান্দোয়ান থানার ওসি নীলমাধব দাস। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয় দুয়ারসিনি হাটের কাছে, পঞ্চায়েত সমিতির নির্মীয়মাণ অতিথি নিবাসে। সেই থেকে পর্যটকদের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। চুরি হয়ে যায় কটেজের জিনিসপত্র।
রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে দুয়ারিসিনির তিনটি কটেজ নতুন করে গড়ে তোলার জন্য টাকা বরাদ্দ করে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ। বছরখানেকের মধ্যে পুরনো চেহারা ফিরে পায় পর্যটনকেন্দ্রটি। কিন্তু বেশ কয়েকবার কটেজগুলি খোলার কথা বলা হলেও, শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। কটেজের খড়ের ছাউনি ও ভিতরের আসবাবপত্র ফের নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে এক বার উদ্বোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা থমকে যায়। নভেম্বর থেকে আবার শুরু হয়েছে কাজ। কটেজ, বারান্দা এবং খাবার জায়গায় দেওয়া হয়েছে টিনের ছাউনি। চালু হওয়ার পরে, বন উন্নয়ন নিগম বা বন দফতরের ওয়েবসাইট থেকে ঘর ‘বুক’ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে।
পুরুলিয়া বেড়াতে এসে এখনও অনেক পর্যটক দুয়ারসিনি ঘুরে যান। কটেজ খোলার আশ্বাসে খুশি তাঁরাও। রবিবারই বাঁকুড়া থেকে পরিবার নিয়ে দুয়ারসিনি গিয়েছিলেন কাজল দে। তিনি বলেন, “কটেজ চালু হলে খুবই ভাল হবে। এখানে রাতে থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।”