Mamata Banerjee

সুযোগ এলে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করব! বাংলার প্রতি ‘বঞ্চনা’ নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা

গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা হিসাবে ঘোষণা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার গঙ্গাসাগর পরিদর্শনে গিয়ে সে কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনওদিন সুযোগ এলেই এই পদক্ষেপ করতে চান তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৮
Share:

সোমবার গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: মমতার ফেসবুক থেকে।

কোনও দিন সুযোগ এলে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা হিসাবে ঘোষণা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়েছেন মু‌খ্যমন্ত্রী। সোমবার গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ থেকে তিনি জানান, সুযোগ এলে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা হিসাবে ঘোষণা করবেন।

Advertisement

গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা হিসাবে ঘোষণা করার দাবি অনেক দিন ধরেই তুলে আসছে রাজ্য সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। সোমবার মমতা বলেন, “আজ পর্যন্ত গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা হয়নি। আমি প্রতিবার আসি, প্রতিবার বলি। আজও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ থেকে বলছি, আজ নয় কাল সুযোগ এলে, যদি কখনও সুযোগ আসে নিশ্চয়ই করব।” তিনি না-হলেও, যদি দলের অন্য কেউ এই সুযোগ পান, তা হলেও গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলার তকমা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন মমতা।

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলার জন্য কেন্দ্র উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু গঙ্গাসাগরের মেলার জন্য কেন্দ্রের সেই উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ মমতার। তিনি বলেন, “কুম্ভমেলায় কেন্দ্রীয় সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে। আমরা কুম্ভমেলাকে সম্মান করি। গঙ্গাসাগর মেলা কিন্তু তার চেয়ে কম নয়। এখানে জল পেরিয়ে অনেক কষ্ট করে আসতে হয়।” তাই সুযোগ পেলে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দিতে চান মমতা। তাঁর কথায়, “আমাদের যে কেউ সুযোগ পেলে এটা করব। না করাটা অন্যায়। কেন বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা হবে?”

Advertisement

কোনও মেলা জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পেলে কেন্দ্রের তরফে মেলা আয়োজনে বিভিন্ন সহযোগিতা পাওয়া যায়। মেলা সুষ্ঠু ভাবে আয়োজনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুদান পেয়ে থাকে রাজ্যগুলি। যেমন কুম্ভ মেলাকে আরও আড়ম্বরপূর্ণ করে তুলতে কেন্দ্র বিভিন্ন সহযোগিতা করছে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। তবে বাংলায় গঙ্গাসাগর মেলা পুরোটাই রাজ্য প্রশাসনকে আয়োজন করতে হয় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন গঙ্গাসাগরে মমতা বলেন, “একটা দুটো জায়গায় কয়েকজন লোক আছেন যাঁরা হয়তো কাজটা করেন না। ৯৯ শতাংশ লোক কাজটা করেন। আমি তাঁদের সবাইকে, স্বেচ্ছাসেবক, তীর্থযাত্রীকে আমার প্রাণভরা অভিনন্দন জানাই। রামকৃষ্ণ মিশন যেমন শিক্ষায় এগিয়ে, ভারত সেবাশ্রম সংঘ তেমন সেবায় এগিয়ে। ঝড়, জল, সাইক্লোন, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আর কাউকে না পেলে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আপনারা পাবেনই।” ঘটনাচক্রে গত বছরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। ওই মহারাজ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতি করেছেন বলে এক নির্বাচনী জনসভা থেকে অভিযোগ তোলেন মমতা।

গঙ্গাসাগর মেলার জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হাসপাতাল, জেটি, হেলিপ্যাড-সহ আরও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতুও তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই সেতুটির জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন সেতুটির বিষয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্যকেই এই সেতু বানাতে উদ্যোগী হতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই সেতু তৈরির জন্য ইতিমধ্যে সমীক্ষা করে টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই সেতুটি তৈরি করছে রাজ্য। প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার লম্বা এই সেতুটি আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে বলে আশাবাদী মমতা। সুন্দরবনের গোসাবা এবং পাথরপ্রতিমার জন্য একটি মহকুমা অফিস তৈরি করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement