মুক্ত: বাড়ির দরজা খুলতেই বেরোল কুকুরটি। নিজস্ব চিত্র।
ঘরের লোকেরা তাকে তালাবন্ধ করে রেখেছিল। দশ দিন পরে সেই তালা ভেঙে অপরিচিত লোকজন ঘরে ঢুকতেই ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করে উঠে ভয়ে ছাদে উঠে যায় সে। পরে অবশ্য দরজা খোলা পেতেই সোজা বাইরে চলে এসে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে জার্মান শেফার্ড কুকুরটি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা লালন শেখের বাড়িতে সিবিআই তদন্তকারী তল্লাশি অভিযান চালায়। লালন শেখ বগটুই গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবং সোনা শেখের বাড়ি থেকে সাতটি অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করার ঘটনার পরের দিন থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। লালনের সন্ধানে তল্লশি চালাতে গিয়ে সিবিআই তদন্তকারী দল লালনের নির্মীয়মাণ দোতলা পাকা বাড়ির প্রবেশ পথের দরজা তালা ভেঙে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকেই লালনের পোষা কুকুরের মুখোমুখি হয় তদন্তকারী দল। দশ বারো জন অচেনা লোককে একসঙ্গে ঘরে ঢুকতে দেখেই ভয়ে দোতলায় উঠে যায় কুকুরটি।
সিবিয়াই তদন্তকারী দল সূত্রের খবর, দশ দিন ধরে লালন শেখ-সহ তার স্ত্রী এবং দুই ছেলে মেয়ে গ্রাম ছাড়া। তাদের পোষা কুকুর ঘরে ছাড়া অবস্থায় ছিল। কুকুরটিকে দশ দিন যাবত কেউই দেখভাল করেনি। এ দিকে ঘরের দরজা খোলা পেতেই কুকুরটি বাইরে বেরিয়ে আসে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সংবাদমাধ্যমের কর্মী-সহ কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মীদের নজরে পড়ে। দশ দিন ধরে তার পরিজনদের ছোঁওয়া পায়নি সে। তা বুঝেই হয়তো কুকুরটি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের কাছে চলে আসে।
কেউ কেউ কুকুরটি জল খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই লোক জনের পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মীরা কুকুরটিকে ধরে নিয়ে লোহার চেনে বেঁধে লালন শেখের পাশের বাড়ি বাবর আলির বাড়িতে নিয়ে যায়। বাবর আলির ছোট মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী নুরজিনা খাতুন বাড়িতে থাকা ভাত তরকারি কুকুরটির খাবারের জন্য দেয়। কুকুরটিকে সেই নিজের কাছে রেখে দেয়। নুরজিনা খাতুনের বাবা, পেশায় টোটো চালক বাবর আলি বলেন, !!আমার পরিবারে দুই মেয়ে এক ছেলে স্বামী স্ত্রী মিলে পাঁচ জন সদস্য। আমরা না হয় ভাত ডাল তরকারি খেয়ে নিতে পারব। কুকুরটার জন্য রোজ মাংস জোগাড়ের ক্ষমতা তো আমাদের নেই। তবুও অবলা প্রাণী তাই এখন দেখভাল করতে হবে।’’