হাসপাতালেই বেদম মার চিকিৎসককে

হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ঘটনার পরে বাকি চার চিকিৎসক পুলিশের সামনে কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।

Advertisement

তন্ময় দত্ত

মুরারই শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০০:৪৮
Share:

নিগৃহীত চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসককে মারধর এবং তার জেরে কর্মবিরতির স্মৃতি এখনও টাটকা। তারই মধ্যে চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ উঠল মুরারইয়ে। বুধবার রাতে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসককে রোগীর দেখভালে অবহেলার অভিযোগ তুলে রোগীর আত্মীয়েরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারই থানার পানিয়ারা গ্রামের এক ব্যক্তিকে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তির করান আত্মীয়েরা। রোগীর আত্মীয়দের কেউ কেউ অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তাঁরা হাসপাতাল চত্বরেই ছিলেন। ভর্তির নাম নথিভুক্ত করতে দেরি হলে অশান্তি শুরু হয়। চিকিৎসক আবুজাহের হাইদেরির অভিযোগ, “রোগীর আত্মীয়েরা প্রথম থেকেই উত্তেজিত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ভর্তি করতে বলেছিলাম। ওরা এতটুকু অপেক্ষা না করেই আমার জামার কলার ধরে কিল-ঘুষি মারে।’’

অভিযোগ, বাধা দিতে গিয়ে প্রহৃত হন কর্তব্যরত এক সিভিক ভলান্টিয়ারও। সেই খবর পেয়ে পুলিশ এসে এক জনকে গ্রেফতার করে। তাতে আরও উত্তেজিত হয়ে জনা তিরিশেক লোক হাসপাতালে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। প্রহৃত চিকিৎসকের দাবি, ‘‘বেগতিক দেখে আমি ভিতরে ঢুকে গেট লাগিয়ে দিয়েছিলাম। উত্তেজিত লোকজন সেই গেট ভাঙারও চেষ্টা করে। আমার ফোন পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।”

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ঘটনার পরে বাকি চার চিকিৎসক পুলিশের সামনে কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। প্রায় তিন ঘণ্টা চলে ওই কর্মবিরতি। পরে পুলিশ এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মধ্যস্থতায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাসে রাতেই তাঁরা কাজে যোগ দেন। চিকিৎসকদের মতে, কয়েক জনকে গ্রেফতার করে এই প্রবণতা রোখা যাবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে পুলিশ আসার আগেই কোনও দিন হাসপাতালে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পরমার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চিকিৎসক নিগ্রহের ধারাবাহিকতা বদলায়নি। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। চিকিৎসক নিজে থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছে। তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধৃতরা হল পানিয়ারা গ্রামের সফিউদ্দিন শেখ, মুরারইয়ের চাঁদ শেখ ও বাজিতপুর গ্রামের মোশারফ হোসেন। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ছাড়া চিকিৎসা সংক্রান্ত নতুন সুরক্ষা আইন ২০১৯ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। সরকারি আইনজীবী সৌকত হাতি বলেন, “অতিরিক্ত মুখ্য ভারপ্রাপ্ত দায়রা বিচারক অমিত চক্রবর্তী তিন জনের ২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।”

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement