ফুলবেড়িয়ায় ডিএম। নিজস্ব চিত্র।
‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে রূপ বদলেছে প্রকৃতির। সে প্রেক্ষিতে এ বারে প্রকল্পটিকে ঘিরে পর্যটনের বিকাশের পরিকল্পনা নিচ্ছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। রবিবার পুরুলিয়ার মানবাজার ২ ব্লকের ফুলবেড়িয়ায় ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের পরিদর্শনের পরে এমনই জানিয়েছেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। পরিদর্শক দলে তাঁর সঙ্গে ছিলেন এসডিও (মানবাজার) শুভজিৎ বসু, বিডিও (মানবাজার ২) গোলাম গওসল আজম, ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
এ দিন সকালে প্রথমে জেলাশাসক ফুলবেড়িয়ায় টটকো ও যমুনা নদীর সংযোগস্থলে ফুলবেড়িয়া সেতু ঘেঁষা জমিতে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের কাজ ঘুরে দেখেন। সেখানে পড়ে থাকা প্রায় ৩৬ বিঘার বেশি জমিতে অড়হর, লাউ, কুমড়ো, আপেল কুল, সেগুন, আম, বীজবিহীন বেল, তাল গাছ লাগানো হয়েছে। অন্য মরসুমের ফসল হিসেবে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষও শুরু হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ওল চাষের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানা যায়।
প্রকল্প এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে টটকো ও যমুনা নদী। নদী দু’টির সংযোগে ওই এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে সেখানে জীববৈচিত্র পার্ক তৈরির কথা জানান জেলাশাসক। সৌন্দর্যায়নে নদীর ধারে সার দিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্প এলাকার চারপাশ ঘিরে দু’দিকে বসানো হবে গেটও। এক দিকের গেট দিয়ে ঢুকে প্রকল্পের কাজ দেখে অন্য পাশের গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন পর্যটকেরা।
পাশাপাশি, প্রকল্প এলাকার কয়েক কিলোমিটার দূরে, মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তার দু’পাশে কুমারী পঞ্চায়েতের খড়িদুয়ার গ্রামের কাছে রয়েছে সৃজন টিলা ও ঠাকুর টিলা। সৃজন টিলায় উঠলে কংসাবতী জলাধার দেখা যায়। ঠাকুর টিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। এ ছাড়াও রয়েছে বান্দোয়ানের ভালুর টিলা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি টিলার উপরে ওঠার জন্য সিঁড়ি তৈরি করা হবে। সব প্রকল্পের পাশে জীববৈচিত্র পার্ক তৈরি করে আলাদা সার্কিট গড়ার কথাও জানা গিয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, “মাটির সৃষ্টি প্রকল্পের আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে। তা ছাড়া, প্রকল্প এলাকার পাশে থাকছে জীববৈচিত্র পার্কও। পর্যটনের সঙ্গে গোটা বিষয়কে যুক্ত করা হলে প্রকল্প ঘুরে দেখার পাশাপাশি আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা। বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রেও জানা যায়, পর্যটকেরা পুঞ্চা হয়ে মানবাজার, মানবাজার ২ হয়ে বান্দোয়ানের ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের সঙ্গে আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। সে লক্ষ্যে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পকে ঘিরে পর্যটনের আলাদা সার্কিট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে।