সাঁওতালডিহিতে বিজেপির সভায়। ছবি: সঙ্গীত নাগ
এই সময় পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে তৃণমূল জিততে পারবে না। তাই নির্বাচন তৃণমূল পিছিয়ে দিতে চাইছে।— পুরুলিয়াতে দলীয় কর্মসূচিতে এসে এই অভিযোগই করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভপতি দিলীপ ঘোষ। যদিও তা মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
শুক্রবার কাশীপুরে ওই বিধানসভার নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি গ্রন্থাগারেরর সভাগৃহে বৈঠক করেন দিলীপ। পরে পাড়া বিধানসভার সাঁওতালডিহিতে মিছিল ও সভায় যোগ দেন। কর্মসূচিগুলিতে ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা এবং সংশ্লিষ্ট বিধানসভার বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদা, নদীয়ারচাঁদ বাউড়ি ও জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাতো।
দল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখেই দিলীপের জেলা সফর। এ দিন বক্তব্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে দলের নেতা-কর্মীদের লড়াইয়ের ময়দানে নামার আহ্বান জানান দিলীপ।
দাবি করেন, ‘‘সার বাংলা জুড়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। দুর্নীতির দায়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছেন। এই সময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন তৃণমূলের পক্ষে কঠিন হবে। তাই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে।’’
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হবে, তা স্থির করে নির্বাচন কমিশন। তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। মনে রাখতে হবে, বর্তমান পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হচ্ছে অগস্ট মাসে। দিলীপবাবুরা ভুলভাল কথা বলছেন।’’
এ দিন সকালে পুরুলিয়া শহরে ‘চায়ে পে চর্চা’-তে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে তৃণমূলকে নানা বিষয়ে কটাক্ষ করেন দিলীপ। অভিযোগ করেন, ‘‘কেন্দ্র থেকে পাঠানো আবাস যোজনা, একশো দিনের টাকা তৃণমূল ঝেড়ে দিচ্ছে। তৃণমূল আগেও ভিখারির দল ছিল। ওদের মনটাই ভিখারি। ওদের নেত্রীকে দেখলেই বোঝা যায়। সকাল থেকে খালি ‘টাকা দাও, টাকা দাও’ করছেন।’’ তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র রাজ্যের নায্য পাওনা টাকা আটকে রেখেছে। গোটা রাজ্য জুড়ে বকেয়া টাকা আদায়ের আন্দোলন তৃণমূল শুরু করতেই ভয় পাচ্ছে বিজেপি।’’
সাঁওতালডিহির সভায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহল থেকে তৃণমূলকে তাড়ানোর আহ্বান জানান দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব পুরুষেরা যেমন জঙ্গলমহল থেকে হিংস্র জানোয়ারদের খেদিয়ে দিয়ে ওই এলাকাকে বাসযোগ্য করে তুলেছিলেন। তেমনই এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহল থেকে বাঁশের লাঠি নিয়ে তৃণমূলকে খেদাতে হবে।’’
রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৃণমূলের অনুকূলে নেই দাবি করে দিলীপ বলেন, ‘‘রাজ্যে কয়লা, গরু, বালি পাচারের মতো দুর্নীতি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রভাবও পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে। মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। গরিব মানুষেরা লুন্ঠিত হয়েছেন। পঞ্চায়েতে লুঠেরাদের শিক্ষা দিতে লড়তে হবে আমাদের।’’
তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন দাবি করছেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনেই বান্দোয়ান, বাঘমুণ্ডি, মানবাজার-সহ বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলের আসনগুলিতে বাসিন্দারা বিজেপিকে খেদিয়ে তৃণমূলকেই জিতিয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটেও সেটাই আর একবার হবে।’’