প্রতীকী ছবি।
পেট্রোল সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। একটু একটু করে সে দিকে এগোচ্ছে ডিজেলও। শুক্রবার ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পুরুলিয়ার ঝালদায় লিটার পিছু ডিজেলের দাম ছিল ৯৩.৯২ টাকা। এই পরিস্থিতিতে আতান্তরে পড়েছেন বেসরকারি বাস, ট্রাক, ডাম্পার ও ছোট গাড়ির মালিকেরা।
করোনার সংক্রমণের জেরে বন্ধ হওয়ার পরে, আবার নতুন করে বেসরকারি বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু পুরুলিয়ার বিভিন্ন রুটগুলিতে বিশেষ যাত্রী হচ্ছে না। তার উপরে, ডিজেলের চড়া দরের জন্য তাঁদের রীতিমতো লোকসান হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসমালিক সমিতির।
দুর্গাপুর-বান্দোয়ান রুটের একটি বেসরকারি বাসের কন্ডাক্টর তন্ময় সেনাপতির দাবি, দৈনিক বাস চলে ১৫০ কিলোমিটার। ডিজেল লাগে কম করে ৭৫ লিটার। জ্বালানি বাবদ খরচ হয়ে যায় সাত হাজার টাকার বেশি। এ দিকে, যাত্রী হচ্ছে হাতে গোনা। পুরুলিয়ার বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ না করা হলে আগামী দিনে কোনও মালিকই বাস চালাতে চাইবেন না।”
পুরুলিয়ার শিল্পাঞ্চল রঘুনাথপুর মহকুমায় ট্রাক ও ডাম্পার তুলনামূলক ভাবে বেশি চলে। ‘রঘুনাথপুর টিপার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর আওতায় তেমন প্রায় ৫৩১টি গাড়ি আছে। সংগঠনের সম্পাদক অরুণকুমার দাঁ বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। তার উপরে দিনে-দিনে ডিজেলের দাম বেড়ে চলায় গাড়ি চালিয়ে লাভ থাকছে নামমাত্র।’’
সংগঠন সূত্রের খবর, আগে ডাম্পার চালিয়ে যা লাভ হত, ডিজেলের দাম বাড়ার পরে তা প্রায় ৯০০-১,০০০ টাকা কমেছে। অরুণবাবু বলেন, ‘‘যে টাকা হাতে আসছে, তাতে ঋণের কিস্তি, চালক-খালাসিদের বেতন আর অন্য খরচ মিটিয়ে কিছুই থাকছে না। বহু গাড়ি বসে গিয়েছে।’’
অরুণবাবুর দাবি, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে সর্বোচ্চ ১৮ টন পণ্য পরিবহণ করার ছাড়পত্র মিলেছে। এ রাজ্যে তা ১৪ টন। তিনি বলেন, ‘‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য পরিবহণের সর্বোচ্চ মাত্রা বাড়ালে ক্ষতি কিছুটা কম হত।”
ছোটগাড়ির ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসা ৩০-৪০ শতাংশ মার খাচ্ছে। ঝালদার বিমল কাঁদু সাতটি গাড়ি ভাড়ায় চালান। তিনি জানান, আগে এক কিলোমিটারের জন্য নিতেন ১২ টাকা। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পরে, সেটা ১৫ টাকা করতে বাধ্য হয়েছেন। বিমলবাবু বলেন, ‘‘ভাড়া নিতে এসে দাম শুনে অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছেন।’’