সারানো হয়েছে নলকূপ। রবিবার ভাঁড়কাটার রামপুরে। নিজস্ব চিত্র
দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে পানীয় জল নিয়ে অভিযোগ পেয়ে তা সমাধানে উদ্যোগী হলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। আবার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযোগ জানানোর পর জল পেয়ে খুশি বাসিন্দারা।
শতাব্দীর সাংসদ এলাকার মধ্যে খয়রাশোলের কৈথি থেকে মাড়গ্রামের পাতনা গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়ার পথে গ্রামবাসীরা বীরভূমের তিন বারের সাংসদ শতাব্দী রায়কে ঘিরে তাঁদের পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেন। গ্রামের মানুষের পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে শতাব্দী রায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরেই জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে বেশ কিছু এলাকার সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজার ব্লকের চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েতের দোবাদি, ধেনুডাঙ্গা, ফুলগরিয়া-সহ পঞ্চায়েত এলাকার ৩৩ টি গ্রামে এখনও পর্যন্ত কোনও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছনোর প্রকল্প চালু হয়নি। এর ফলে চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজন পানীয় জল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। এখনও পর্যন্ত জলস্বপ্ন প্রকল্প চালু না হওয়ার বিষয়ে গ্রামের বাসিন্দারা সাংসদ শতাব্দী রায়কে অভিযোগ করেন। মহম্মদবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের ফুলারপুর গ্রামেও এখনও পর্যন্ত পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি বলে গ্রামবাসীরা সাংসদের কাছে অভিযোগ করেন।
রামপুরহাট ২ ব্লকের বিষ্ণুপুর অঞ্চলের পাতনা, পোড্ডা, কালীদহ, ললিতাকুণ্ড, বসোয়া নামোপাড়া এলাকায় এখনও পর্যন্ত কোনও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছনোর পাইপ লাইন বসানোর কাজ হয়নি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। কিছু জায়গায় পাইপলাইন পৌঁছলেও সেখানকার রাস্তা মেরামত করা হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। পাশাপাশি মেলেডাঙ্গা গ্রামে এখনও বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার সংযোগ দেওয়া হয়নি। বসোয়া এবং বিষ্ণূপুর গ্রামেও বেশ কিছু অংশে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার সংযোগ দেওয়া হয়নি।
নলহাটি ১ ব্লকের পাইকপাড়া, সিউড়ি ২ ব্লকের বনশঙ্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিড়ালতোড়, সিঙ্গুর, দিঘিরপাড়-সহ খয়রাশোল ব্লকের বড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিরা, কাঁকড়তলা, কৈথি গ্রামের বাসিন্দারাও সাংসদের কাছে তাদের এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেন।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বীরভূম জেলা নির্বাহী বাস্তুকার সোমনাথ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সাংসদ শতাব্দী রায় যে সমস্ত এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছনোর বিষয়ে জানিয়েছেন তার মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ চালু আছে সেই সমস্ত প্রকল্পগুলি কাজ দ্রুত শেষ হলে এলাকার বাসিন্দারা প্রকল্পের সুবিধে পাবেন। আশা করা যায় ২০২৩ সালের মধ্যে সমস্ত এলাকায় পানীয় জল পৌঁছে যাবে।’’
দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে মহম্মদবাজার ব্লকের ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েতে গ্রামে পেয়ে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রামের পানীয় জলের সমস্যার কথা জানানোর এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই সংস্কার করে দেওয়া হল গ্রামের দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পরে থাকা পাঁচটি টিউবওয়েল। পানীয় জল পাওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা। ২৪ তারিখ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পঞ্চায়েতের রামপুর গ্রামে যান। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা বহুদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ জানান। সেখান থেকেই বিডিও অভিষেক মিশ্রকে ফোন করে গ্রামের নলকূপ সারাতে বলেন তিনি। সেই মতোই রবিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রামের পাঁচটি নলকূপ সারিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামে পুনরায় পানীয় জল পেয়ে খুশি গ্রামবাসীরা। আশিস বলেন, ‘‘বিডিও পাঁচটি নলকূপ সারিয়ে গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’’