প্রতীকী ছবি।
পড়াশোনা ছাড়িয়ে বাড়িতে কাজ করান দিদি। কাজ না করলে জোটে মারধর। ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়ার পরে বাঁকুড়া ‘চাইল্ডলাইনের’ কাছে এমনই অভিযোগ তুলল ধানবাদের বছর পনেরোর এক নাবালিকা।
বুধবার রাতে ধানবাদ-রাঁচী-গড়বেতা লোকাল ট্রেনে বছর পনেরোর ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া জিআরপি। উদ্ধারের পরে রাতেই তাকে বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া শিশুকল্যাণ সমিতির সামনে তাকে হাজির করা হয়। পরে তাকে পুরুলিয়ার আনন্দমঠ হোমে রাখার নির্দেশ দেন বাঁকুড়া শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্যেরা। সেই সঙ্গে বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনকে ওই নাবালিকার অভিযোগের তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাবালিকাকে উদ্ধারের পরেই বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনের তরফে তাকে কাউন্সেলিং করা হয়। জেলা চাইল্ডলাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল জানান, ওই নাবালিকা তাদের জানিয়েছে, তারা ছয় ভাইবোন। বড় দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে দিদির বাড়িতে রেখেছিলেন বাবা-মা। তার অভিযোগ, দিদি সম্প্রতি তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। উল্টে তাকে দিয়ে বাড়ির কাজকর্ম করানো হত। কাজ না করলে মারধরও করা হত বলে অভিযোগ। বুধবার দিদির সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় সে রাগ করে বাড়ি ছাড়ে। দুপুরে ধানবাদের স্টেশন থেকে ওই ট্রেনে ওঠে বসেছিল। এ দিন চেষ্টা করেও ওই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
সজলবাবু বলেন, “মেয়েটি মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েই দিদির বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যায় বলে আমরা জানতে পেরেছি। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাঁকুড়ায় আসতে বলা হয়েছে।” এ দিন বাঁকুড়া চাইল্ডলাইনের শিশুদিবসের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের হাতে ‘দোস্তি ব্যান্ড’ পরিয়ে এসেছে ওই নাবালিকা। সজলবাবু বলেন, “আমাদের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে মিশতে পেরে মেয়েটি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। পড়াশোনা করার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছে সে। গোটা বিষয়টি জেলা শিশুকল্যাণ সমিতিকে জানাব।”
পরে ওই নাবালিকাকে পুরুলিয়ার হোমে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা চাইল্ডলাইন সূত্রে জানা গিয়েছে।