অযোধ্যা পাহাড়তলির জমিতে আগুন। মঙ্গলবার রাতে। নিজস্ব চিত্র।
আখের জমিতে অগ্নিকাণ্ডে ছাই হয়ে গেল কয়েক লক্ষ টাকার ফসল। আড়শা ব্লকের শিরকাবাদ পঞ্চায়েতের অযোধ্যা পাহাড়তলির এই ঘটনায় প্রায় ৭৫ বিঘা জমির আখ নষ্ট হয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতরের হিসাব। দমকলের দু’টি ইঞ্জিনের তৎপরতায় মঙ্গলবার মাঝরাতে আগুন আয়ত্তে আসে বলে জানা গিয়েছে। রাতেই পাহাড়তলিতে পৌঁছন পুলিশের কর্তারা, আড়শার বিডিও, স্থানীয় বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোরা। বুধবার এলাকায় যান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত প্রায় ৮টা নাগাদ পাহাড়তলির আখ খেতে আগুন লাগে। এই এলাকার চাষিদের কাছে ধান-আনাজের পাশাপাশি আখ চাষ অন্যতম অর্থকরী ফসল। পাহাড়ের ঢালু জমিতে চাষিরা আখ চাষ করেন। কিছু দিন আগে থেকে ফসল কাটা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে আগুন দেখতে পেয়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত আগুন ছড়িযে পড়ে। এক চাষির কথায়, ‘‘এখন তো রোদে সব শুকনো। ফলে, আগুন লাগার পরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পুরুলিয়া শহর থেকে যতক্ষণে দমকলের ইঞ্জিন এসে পৌঁছয়, তখন অনেক ফসল পুড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে।’’
নিতাই দে নামে এক চাষির দাবি, ‘‘আমার ২০ বিঘার আখ সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। দমকল পরে এসেছিল। কিন্তু ততক্ষণে প্রায় সব শেষ।’’ রামু মণ্ডল নামে আর এক চাষির কথায়, ‘‘অন্য দিকে আগুনটা জ্বলছিল। লোকজন ছিল বলে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে খেতের মাঝে বেশ কিছুটা অংশ কেটে দিতে পেরেছিলাম। তাই কিছুটা রক্ষা পেলেও, ছ’বিঘার মতো জমির আখ পুড়ে গিয়েছে।’’ চাষিদের দাবি, খেত থেকেই এখন আখ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিঘা প্রতি দাম মিলছে ৪৫-৫০ হাজার টাকা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এই চাষই আমাদের বিকল্প অর্থকরী ফসল। মাঝে দু’বছর সে ভাবে চাষ করতে পারিনি। এ বার ফসল হলেও, আগুনে সব শেষ হয়ে গেল। প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে চিঠি দেব।’’
বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো বলেন,‘‘কৃষি দফতরের হিসেবে যতটা জমির আগুনে নষ্ট হয়েছে, তার মূল্য কমবেশি ৩৫ লক্ষ টাকা। এ দিন কৃষি দফতর ও প্রশাসন সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। আমিও দফতরের কাছে চাষিদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাব।’’ আড়শার বিডিও শঙ্খ ঘটক বলেন, ‘‘কৃষি দফতর পর্যবেক্ষণ করে মোট ৭৫ বিঘা জমির আখ আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে।’’
জেলার উপ-কৃষি আধিকারিক চন্দন পাল জানান, এ দিন তাঁদের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে রিপোর্ট দিয়েছেন। তাঁরাও সে রিপোর্ট রাজ্য স্তরে পাঠিয়েছেন। যা নির্দেশ আসবে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।