বিপর্যয়: ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে মুরগির খামার। বিষ্ণুপুরের পানরডাঙর গ্রামে শনিবার। নিজস্ব চিত্র
আকাশ কালো করে বৃষ্টি, সঙ্গে শিলা। তার পরে আকাশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে হঠাৎ তীব্র আওয়াজের সঙ্গে ধেয়ে আসে তীব্র ঝড়।
সেই ঝড়েই শুক্রবার সন্ধ্যার পরে তছনছ হয়ে গেল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের পানরডাঙর গ্রাম। ভেঙে পড়ল বাড়ি। চালা ভেঙে পড়ে যায় মুরগির খামার। বিদ্যুতের তারে গাছ ভেঙে রাতভর অন্ধকারে ডুবে যায় সমস্ত গ্রাম।
বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিষ দত্ত বলেন, ‘‘ঝড়ে যেখানে ক্ষতি হয়েছে, সেখানকার পঞ্চায়েত অফিসে ব্লক থেকে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।’’ স্থানীয় উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তসমিনা খাতুন বলেন, ‘‘ক্ষতির সমীক্ষা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সাহায্য দেওয়া হবে।’’
শনিবার কৃষিনির্ভর পানরডাঙর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চাষও বরবাদ হয়েছে। জমিতে কাদায় লুটিয়ে পড়েছে তিল থেকে ধান, শশা থেকে নানা আনাজের গাছ। কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে গ্রামবাসী দিলীপ দে, জয়দেব ভুঁইরা বলেন, ‘‘লকডাউনে বাইরে আনাজ না পাঠাতে পেরে, ক্ষতি করে জলের দরে আনাজ বিক্রি করছিলাম। শুক্রবারের সন্ধ্যার ঝড় সব শেষ করে দিয়ে দেনার দায়ে ডুবিয়ে দিয়ে গেল।’’
দিনমজুর নেপাল বাগদি বলেন, ‘‘বৃষ্টি থামতেই হুড়মুড়িয়ে হেলে পড়ল দেওয়াল। কোনও রকমে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রাণে বাঁচি।’’ ঘর ভেঙেছে আরও কয়েকজনের। ঝড়ে মাটিতে মিশে গিয়েছে মুরগি ব্যবসায়ী সহদেব ভুঁইয়ের পোলট্রি ফার্ম। তাঁর দাবি, ‘‘ঋণ করে সবে দু’বছর মুরগি পালনের ব্যবসা শুরু করেছিলাম। ৪০ সেকেন্ডের ঝড়ে শেষ হয়ে গেল পাঁচ লক্ষেরও বেশি টাকা খরচ করে তৈরি মুরগি খামার। খামার বন্ধ ছিল। না হলে অনেক মুরগিও মরত।’’
বিষ্ণুপুর ব্লকের প্রাণিসম্পদ আধিকারিক রাকেশ মণ্ডল জানান, খামার মালিক প্রয়োজনীয় নথি-সহ পঞ্চায়েতেও সাহায্যের আবেদন করতে পারেন। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার রাধানগরের আধিকারিক সুশান্ত বেরা বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত থেকেই কর্মীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু তারে গাছ পড়ায় ও অনেক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বেগ পেতে হচ্ছে।’’