কাজে মগ্ন পঞ্চায়েত প্রধান |ঝালদার বিরুডি গ্রামে | ছবি: দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় |
ভোটে জিতে রাতারাতি পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছেন। তবে বিড়ি বাঁধার পুরনো পেশাকে ছাড়তে নারাজ পুরুলিয়ার ঝালদার নয়াডি পঞ্চায়েতের বিরুডি গ্রামের প্রদীপ নায়ক। পঞ্চায়েতের কাজ মিটিয়ে বাড়ি ফিরে তাই আগের মতো খাটিয়ায় বসে বিড়ি বাঁধার কাজে মন দেন। প্রদীপের কথায়, “প্রধানের দায়িত্বে তো কয়েকটা বছরের। তার পরে হয়তো বা এই পেশাতেই ফিরতে হবে। তাই খামোখা অভ্যাস ছেড়ে লাভ কী!”
গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের নায়কপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপের পরিবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এ হেন প্রদীপকে এ বারে নয়াডি পঞ্চায়েতের ২ নম্বর আসনে প্রার্থী করে বিজেপি। প্রথম বার ভোটের ময়দানে নেমে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থীকে বড় অঙ্কের ব্যবধানে হারিয়েও দেন। তফসিলি সংরক্ষিত হওয়ায় প্রধানের পদ পেতেও সমস্যা হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সাম্মানিক হিসাবে পঞ্চায়েত প্রধান মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাতা পান। তাতে সংসার চালাতে সুবিধা হবে, জানান প্রদীপ। তবে কোনও ভাবে বাপ-ঠাকুর্দার পেশাকে ছাড়তে নারাজ তিনি। প্রদীপের কথায়, “দিন আনি দিন খাই সংসারে অভাব কী জিনিস, তা এত দিনে জানা হয়ে গিয়েছে। সবাইকে নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।” তাঁর স্ত্রী আম্বাবতীও বলেন, “বিড়ি বাঁধার পেশা সংসারটাকে এত দিন টিকিয়ে রেখেছে। স্বামী প্রধান হয়েছেন বটে। তবে ওই কাজকে অবহেলা করার কোনও প্রশ্ন নেই।”
এলাকার উন্নয়নে কী ভাবনা রয়েছে? প্রদীপ জানান, এলাকার রাস্তাঘাটের সংস্কার ও পানীয় জলের সমস্যা মেটানো প্রাথমিক লক্ষ্য। সেই কাজে জোর দেওয়া হবে। এলাকাবাসীর আর্থিক অবস্থা শুধরোনোর বিষয়টিও মাথায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কয়েক দিন হল দায়িত্ব পেয়েছি। এলাকার মানুষের আর্থিক উন্নয়নে পঞ্চায়েতের তরফে যেটুকু করার, অবশ্যই করা হবে। আগামী দিনে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গেও আমরা কথা বলব।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা এলাকার নেতা শঙ্কর মাহাতো বলেন, “প্রদীপের মতো মানুষের হাত ধরেই এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে। তাঁকেঅভিনন্দন জানাই।”