—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’মাস আগে ছিল ২৭। মাস দুয়েকের ব্যবধানে সেই সংখ্যা তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৪। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় যে ভাবে ডেঙ্গি রোগী বাড়ছে তাতে সেপ্টেম্বরের শেষে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা। তবে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় দু’টি রোগ বেশি ধরা পড়ছে। এখন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া রামপুরহাট পুর এলাকার আরবান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্যজেলায় ৪ হাজার ৮৭০ জনের ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮৪ জন ডেঙ্গি রোগী মিলেছে। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৫ জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মিলেছে। রামপুরহাট পুর এলাকায়ও ছ’জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মিলেছে। তুলনামূলক ভাবে নলহাটি পুরসভা এলাকাতে এখনও পর্যন্ত এক জনও ডেঙ্গি রোগীর সন্ধান মেলেনি। অন্য দিকে, নলহাটি ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় আবার রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার মধ্যে সবথেকে বেশি ২২ জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মিলেছে। রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকাতে ১৪ জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ মিলেছে। এখনও পর্যন্ত ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় চার জন ডেঙ্গি রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
রামপুরহাট পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের নিকাশি ব্যবস্থা এতই খারাপ যে, সামান্য বৃষ্টিতেই পুরসভার ৬, ৭, ৮, ৯, ১১, ১৩, ১৫, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন রাস্তায় জল উঠে যায়। অনেক সময় জল বাড়িতেও ঢুকে যায়। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জমা জল চার-পাঁচ দিন থেকে যায়। ওই জমা জল সরানোর জন্য পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয় না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া কাঁদর, কচুরিপানা-সহ নোংরা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে। অথচ কাঁদরের নোংরা আবর্জনা, কচুরিপানা পরিষ্কার করার জন্য পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কাঁদরের জমা জলে ডেঙ্গির মশা জন্ম নিলেও পুরসভা কাঁদরের জল পরিষ্কার করার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাঁদর পাড়ের ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার করার ব্যাপারেও পুরসভা উদাসীন।
পুরপ্রধান সৌমেন ভকত অবশ্য বলেন, ‘‘শহরের জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। এর ফলে এ বছরে অনেক কম জল জমেছে। জায়গায় জায়গায় শহরের জমা জল দূর করার জন্য পুরসভা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করে। ডেঙ্গি সচেতনতায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি রোগীর খোঁজে সমীক্ষা করছে। তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশও দেন। পুরসভার অধীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ডেঙ্গি সচেতনতায় আরও বেশি মাইকিং করা হবে বলে পুরপ্রধান জানান।’’
রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ রায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও জোর দেওয়া হবে।’’ ডেঙ্গি রোগী খোঁজে পরীক্ষার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি। প্রতিটি ব্লকে ফিভার ক্লিনিক করা হয়েছে। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।