বেগুনকোদরে উৎসব। নিজস্ব চিত্র।
করোনা-আবহের মধ্যে শুরু হল রাস মহোৎসব। সোমবার রাত ৮টা নাগাদ পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার বেগুনকোদরে স্কুল ময়দানে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের সূচনা করেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর সুষেণ মাঝি। ছিলেন এলাকার বিশিষ্টেরাও। তবে অন্য বারের মতো এ বারেও উৎসব সূচনার মঞ্চে উঠেছে দু’শো বছরের বেশি প্রাচীন রাসমন্দির সংস্কারের দাবি।
এলাকার প্রবীণেরা জানান, ১৭৯৭-তে রাজা রতন সিংহের সময়ে বেগুনকোদরে এই উৎসবের সূচনা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেগুনকোদর শুধু নয়, উৎসবে যোগ দিতে লাগোয়া গ্রামগুলির পাশাপাশি, অযোধ্যা পাহাড়তলির বেশ কিছু গ্রামের মানুষজনও আসেন থাকেন এখানে। তবে বাসিন্দাদের আক্ষেপ, উৎসব যাকে ঘিরে, বেগুনকোদর বাজারের মাঝে আড়াই হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে প্রাচীন রাসমন্দিরটি সংস্কারের অভাবে বিধ্বস্ত। রাসমন্দিরের গা থেকে মাঝে-মধ্যেই খসে পড়ে চাঙড়, দাবি বাসিন্দাদের। বেগুনকোদরের বাসিন্দা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী তপনকুমার বিদের কথায়, ‘‘সংস্কারের অভাবে প্রাচীন পুরাকীর্তিটি ধ্বংসের মুখে। অবিলম্বে রাসমন্দিরটি অধিগ্রহণ করে ‘হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হোক।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর জুলাইয়ে রাজ্যের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তরফে জেলা পূর্ত দফতরকে রাসমঞ্চের পরিচর্যা ও সংরক্ষণের ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে বলা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। রাসমন্দিরটি টিকিয়ে রাখতে যাঁরা প্রথম থেকে সরব, সেই ‘বেগুনকোদর নাগরিক মঞ্চ’-এর অন্যতম সদস্য চন্দন চক্রবর্তীরও অভিযোগ, ‘‘সংস্কারের কাজ কিছুই হয়নি। সরকার এগিয়ে না এলে, প্রাচীন ঐতিহ্যটি মাটিতে মিশে যেতে বেশি সময় লাগবে না।’’
যদিও ঝালদা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সরলা মুর্মুর বক্তব্য,‘‘মাঝে এক বার সংস্কারের ব্যাপারে পদক্ষেপ হয়েছিল বলে জানি। তবে কী কারণে তা আটকে রয়েছে, তা জানা নেই।’’ অবিলম্বে খোঁজ নিয়ে কাজ শুরুর ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস তাঁর।