Corona

ইদের মুখে বাজার মন্দা, আর্জি সময় পরিবর্তনের

ক্রেতাদেরও অনেকের মত, যে সময়ে দোকান খোলা থাকছে তাতে বাজার ঘুরে পছন্দ মতো সামগ্রী কেনার সময় পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৫:৪০
Share:

কীর্ণাহারের বাজারে ভিড়। ছবি: কল্যাণ আচার্য।

জেলাতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। তার মধ্যেই আর সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে খুশির উৎসব ইদ। কিন্তু, আংশিক লকডাউনে ইদের বাজারে কেনাকাটা করার সময় পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ফলে অনেক জায়গাতেই ক্রেতার অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের প্রয়োজন আছে ঠিক। কিন্তু, দোকান খোলার বর্তমান যে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে তা বদল করলে ইদের বাজারে দোকানিরা কিছুটা বিক্রিবাটা করার সময় পাবেন।’’

Advertisement

ক্রেতাদেরও অনেকের মত, যে সময়ে দোকান খোলা থাকছে তাতে বাজার ঘুরে পছন্দ মতো সামগ্রী কেনার সময় পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামাঞ্চলের অনেক ক্রেতা শহরে বাজার করতে যেতে না পারছেন না। তাঁদের মতে, বাজার সকাল আটটা থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা খুলে রাখলে ভাল হয়। এই পরিস্থিতিতে শহরাঞ্চলের মতো গ্রামাঞ্চলেও যাঁদের সুযোগ আছে, তাঁরা অনলাইনে পছন্দ মতো জিনিস অর্ডার দিয়ে ঘরে বসে কিনে নিচ্ছেন। রামপুরহাট থানার মাসড়া গ্রামের এক পাথর ব্যবসায়ী বলছেন, “ছেলে নিজের পছন্দ মতো যাবতীয় পোশাক, জুতো অনলাইনে কিনে নিয়েছে। যা পরিস্থিতি তাতে বাইরে বেরিয়ে বাজার করতে যাওয়াটা খুবই ঝুঁকির।’’

অন্য দিকে, গ্রামাঞ্চলের ক্রেতার উপরে নির্ভর করে ইদের বাজারে প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার লাচ্ছা, সিমুই অর্ডার দিয়েছিলেন রামপুরহাট শহরে হাটতলা পাড়ার ফল ব্যবসায়ী জাফর শেখ। জাফরের কথায়, ‘‘বাজারে ভিড় নাই। গ্রামাঞ্চলের ক্রেতারা এই সময় শহরের দোকান থেকে লাচ্চা, সিমুই কেনার পাশাপাশি নানা রকম ফল কেনাকাটি করে থাকেন। কিন্তু, বাজার আংশিক সময় খোলা থাকার জন্য মজুত ফল পচে যাচ্ছে।’’ জাফর শেখের মতো ময়ূরেশ্বরের কোটাসুর এলাকার ফল ব্যবসায়ী সুবোধ ধীবর, কীর্ণাহারের বুলু শেখ রাও জানালেন, বাজারে খরিদ্দার নেই। এর ফলে দোকানে বিক্রিবাটা কম। মজুত ফল পচে যাচ্ছে।

Advertisement

জেলায় দুবরাজপুর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, আমোদপুর, লাভপুর, বোলপুর, ইলামবাজার, নানুর, রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই সর্বত্রই বস্ত্র ব্যবসায়ী থেকে জুতো, ফল, মনিহারি দোকানিরা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদা আছে। কিন্তু, দোকান খোলার যে সময় দেওয়া হয়েছে তাতে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতাদের পক্ষে শহরে বাজার করতে আসা মুশকিল। দুবরাজপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী শামিম নাওয়াজও বলছেন, ‘‘এ বছর বাজার ভাল ছিল। কিন্তু, দোকান খুলে রাখার সময় ঠিক হয়নি। সকালের দিকে গ্রামাঞ্চল থেকে ক্রেতাদের আসতেই দশটা বেজে যায়। আবার সন্ধ্যায় রোজা খোলার সময় বাজারে কেউ আসতেই চাইবেন না। ফলে সেই অর্থে বিক্রি হচ্ছে না।’’

একই কথা জানিয়েছেন সিউড়ির বস্ত্র ব্যবসায়ী প্রদীপ দত্ত, বোলপুরের মৃগাঙ্ক আগরওয়াল, প্রশান্ত সিংহরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর লকডাউন থাকলেও ইদের আগে কিছুটা শিথিল থাকার জন্য বাজারে বিক্রি হয়েছিল। এই বছর ক্রেতারাই আসতে পারছেন না। রামপুরহাট শহরের ফুটপাত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহাজাদা হোসেন কিনু বলছেন, ‘‘গত বছর ভিড় সামাল দিতে পুলিশের সঙ্গে ক্রেতাদের লুকোচুরি খেলা চলছিল। এই বছর ক্রেতার সঙ্গে দোকানদারদের লুকোচুরি খেলা চলছে।’’

রামপুরহাট শহরের বস্ত্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ শরিফউদ্দিনের আবার দাবি, বাজারে পুরনো স্টকই বিক্রি হচ্ছে না। পারিবারিক বাজার তেমন হচ্ছে না। মূলত সকালের দিকেই কিছু বিক্রি হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘যে দোকানি এই সময় দিনে এক লক্ষ টাকার সামগ্রি বিক্রি করতেন, সেখানে খুব জোর দশ হাজার থেকে কুড়ি হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement