—প্রতীকী চিত্র।
খাতায়-কলমে বর্ষা এলেও ভারী বৃষ্টির দেখা নেই। এরই মধ্যে মরসুমের প্রথম ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলল পুরুলিয়া শহরে। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত জেলায় চার জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। সাঁতুড়ি, মানবাজার ১, পুঞ্চা ও কাশীপুর ব্লকে আক্রান্ত চার জন বাইরে থেকে জেলায় এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরুলিয়া পুরসভা জানাচ্ছে, সম্প্রতি পুঞ্চা ব্লক এলাকা থেকে এক মহিলা শহরে আসার দিন দুয়েক পরে জ্বরে পড়েন। জ্বর না ছাড়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়ে। বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতেই তিনি রয়েছেন। জানা গিয়েছে, আক্রান্ত মহিলা তাঁর এক নিকটাত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতের একটি রাজ্যে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থেকে পুঞ্চা হয়ে দিন কয়েক আগে পুরুলিয়া শহরে আসেন। তারপরেই তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়ে।
শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিমটাঁড় এলাকায় ওই ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মেলার পরে এলাকায় বাড়ি বাড়ি জ্বরের সমীক্ষা শুরু করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। এক আধিকারিক জানান, ওই বাড়ির সমস্ত সদস্য-সহ লাগোয়া বাড়িগুলির সদস্যদের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। কারও রক্তের নমুনাতেই ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি।
এলাকার পুর-প্রতিনিধি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘এলাকার প্রতিটি বাড়িতে জল জমে রয়েছে কি না সরজমিনে তা খতিয়ে দেখছেন পুর-কর্মীরা। জ্বরের সমীক্ষাও চলছে।’’ তিনি জানান, বছর দুয়েক আগে ওই ওয়ার্ডেই প্রথম ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। তারপরে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তা ছড়িয়ে পড়ে। এই কারণে আরও বেশি সতর্কতা নিয়েছে পুরসভা।
রাজ্যে বর্ষা ঢুকলেও পুরুলিয়াতে এ বার এখনও তেমন বৃষ্টি শুরু হয়নি। কখনও ঝিরঝিরে, কখনও একপশলা বৃষ্টি হচ্ছে। তারপরেই ঝকঝকে রোদ। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ঠিক এমন পরিবেশই ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার বেড়ে ওঠার জন্য আদর্শ।
শহরবাসীর অভিযোগ, মূল রাস্তাগুলি থেকে আবর্জনা সাফাই হলেও বিভিন্ন পাড়া থেকে নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হচ্ছে না। আবর্জনার সঙ্গে খাবারের ছোট ছোট খাবারের কৌটো প্রচুর পরিমাণে যত্রতত্র পড়ে থাকছে। খোলামুখ এই পাত্রগুলিতে জল জমে থাকছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘জোরে বা ঝমঝম বৃষ্টি হলে জল বয়ে যাবে। কিন্তু এখন যা বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে খোলামুখ পাত্রে জল জমে থাকলে দিন দশেকের মধ্যেই মশার লার্ভা জন্মানোর সম্ভাবনা থেকে যায়।’’
বর্ষার মরসুমে তাই ঢিলেঢালা সাফাইয়ের কাজে প্রমাদ গুনছেন শহরবাসী। তাঁদের দাবি, সাফাইয়ের কাজে আরও গতি আনতে হবে। মূল রাস্তার মোড় বা মূল রাস্তা লাগোয়া কিছু পাড়া নয়, শহরের সর্বত্রই নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই করতে হবে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি বিভাস বলেন, ‘‘সাফাইয়ের কাজে পুরসভার নজর রয়েছে। তবে বর্ষায় যাতে কোথাও জল জমে না থাকে, সে দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।’’