শোকাহত পরিবার (বাঁ দিকে), মৃত সহদেব খাঁ (ডান দিকে) নিজস্ব চিত্র।
এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতর বাঁকুড়ায়। মৃত ব্যক্তি বিজেপি কর্মী হওয়াতেই খুন, এই দাবিতে পথে নেমেছে বিজেপি। পাল্টা তাঁকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি তৃণমূলের। তবে ময়নাতদন্তে খুনের প্রমাণ মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে দাবি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে বাঁকুড়ার কোতুলপুর থানার কোটালদিঘি ঢক পাড়ার বাসিন্দা পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা সহদেব পাত্রসায়রে বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রবিবার বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও তিনি ফেরেননি। সোমবার সকালে গ্রামের অদূরে পাথরচটির কাছে রাস্তার ধারে একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
মৃত সহদেবকে দলের সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করে পথে নামে বিজেপি। তাঁকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া কেরাণীবাঁধ মোড়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধের পাশাপাশি বিষ্ণুপুরে মোমবাতি মিছিলও করে বিজেপি।
মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পায় পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কয়েক জন দাবি করছিলেন ঘটনাটি আসলে খুন। আমরা মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করানোর পাশাপাশি ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফিও করাই। ময়নাতদন্তে খুনের প্রমাণ মেলেনি। রিপোর্টে একে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ওই ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মৃতের বোন টগরী সাঁতরা বলেন, ‘‘দাদা আগে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে রাজনীতি করতেন না। দাদার কোনও মানসিক অবসাদ ছিল না। তাই আমাদের সন্দেহ হচ্ছে।’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ বলেন, ‘‘সহদেব আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁকে খুন করা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট আসার আগে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। মৃতের পরিবার অভিযোগ দায়ের না করলে আমরা দলীয় ভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করব।’’ এলাকার তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি সহদেব তৃণমূলের সমর্থক ছিলেন। যেন তেন প্রকারে বিজেপি চাইছে সংবাদ মাধ্যমের নজর কাড়তে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।