খেজুর গাছে লাগানো হচ্ছে হাঁড়ি। মহম্মদবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
ধীরে ধীরে কমছে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। খেজুর রসের সময় কাছে চলে এসেছে। আর তাই হাজির হয়েছেন শিউলিরা। মহম্মদবাজারের চিল্লা, খয়ড়াকুড়ি ও তিলপাড়া ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় তাঁদের দেখা মিলতে শুরু করেছে। এসেই তাঁরা খেজুর গাছের পরিচর্যা শুরু হয়েছে।
নদিয়ার বেথুয়াডহরি ও পলাশি থেকে এসেছেন মুস্তাকিম শেখ, মতিহার শেখ, শেখ ফুলু, মোফাজেল শেখ ও মিনারুল শেখরা। মুস্তাকিম শেখ এ বার ১২০টি খেজুর গাছ, শেখ ফুলু ১৯০টি ও মতিহার শেখ ১৫০টি খেজুর গাছ থেকে এ বার রস সংগ্রহ করছেন। তাঁরা জানালেন, তিন বার গাছ কাটার পরে রস বেরিয়ে আসতে শুরু করে। শেষে টিয়াকাট কাটার সময় ইংরেজি ‘ভি’-এর মত কেটে সেখানে একটা কাঠি আটকে দেওয়া হয়। সেই কাঠি বেয়ে খেজুর রস জমা হতে থাকে গাছে টাঙানো হাঁড়িতে। এই রস জ্বাল দিয়েই নলেন গুড় ও পাটালি তৈরি হয়।
শিউলিরা জানালেন, শীত এখনও সেভাবে পরেনি। তাই এখন রসও মিলছে খুব কম। শেখ ফুলু বলেন, ‘‘ভরা মরসুমে দু’বার করে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। দুপুর দুটো নাগাদ যে হাঁড়িগুলি টাঙানো হয়। সেই রস সংগ্রহ করা হয় ভোর ৪-৫টা নাগাদ। তখন আবার হাঁড়ি টাঙানো হয়। সেই রস সংগ্রহ করা হয় দুপুরে। এখন এক বার করে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২৫-৩০ কেজি রস মিলছে। যা থেকে ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হচ্ছে।’’
শিউলি মুস্তাকিম শেখ বলেন, ‘‘১২০টি গাছ থেকে যা রস পাওয়া যাচ্ছে তাতে ৫-৭ কেজির মতো গুড় তৈরি হচ্ছে। অগ্রহায়ণে শীত যদি জাঁকিয়ে পড়ে তা হলে অনেক বেশি রসও মিলবে।’’ ওই একই বক্তব্য মতিহার শেখেরও। ভাল ভাবে ঠান্ডার পড়ার জন্য তাঁরা অপেক্ষায় আছেন বলে জানালেন শিউলিরা।
শিউলিরা জানালেন, এ বারে এখনও ক্রেতার সংখ্যাও। এ বারে নলেন গুড় বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা কেজি দরে। লবাদ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে। শীত বাড়লে গুড়প্রেমীরা ভিড় বাড়বে বলে আশায় শিউলির দল।