কোলিয়ারি স্তব্ধ করে আন্দোলন করল সিপিএম। ফাইল ছবি।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সময়মতো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলে প্রায় আট ঘণ্টা কোলিয়ারি স্তব্ধ করে আন্দোলন করল সিপিএম। মঙ্গলবার বড়জোড়ার ট্রান্স দামোদর কোলিয়ারির ঘটনা। পরে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসা ও দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন ওঠে।
সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী জানান, কোলিয়ারির মাটি, কয়লা ও পাথর পড়ে বড়জোড়ার পাহাড়পুর এলাকার প্রায় ৩৪ একর চাষযোগ্য জমি নষ্ট হয়েছে। শতাধিক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ ওই জমি অধিগ্রহণ করেনি। তবে একর প্রতি চাষিদের ৬৪ হাজার টাকা বার্ষিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। ২০১৫ থেকে নিয়মিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও ২০২১ থেকে তা বন্ধ রয়েছে বলে দাবি। এ ছাড়া, ওই জমিতে সেলোপাম্পসেট থাকা চাষিদের সদ্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ, সেখানেও বহু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত চাষি বঞ্চিত হয়েছেন এবং বেশ কিছু ভুয়ো চাষি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
এ সবের প্রতিবাদে এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কোলিয়ারিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সিপিএম কর্মীরা। কোলিয়ারির কয়লা উত্তোলন ও পরিবহণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষে সন্ধ্যার পরে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামলে কাজ শুরু হয়। সুজয় বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া টানা দু’বছর বন্ধ রয়েছে। সদ্য সাবমার্সিবলের ক্ষতির জন্য কিছু চাষিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। দেখা গিয়েছে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত অনেক চাষিই ক্ষতিপূরণ পাননি। আমরা এর আগে ক্ষতিপূরণ পাওয়া চাষিদের তালিকা প্রকাশের দাবি তুললেও কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ তা করেনি।”
তাঁর আরও দাবি, অবিলম্বে জমির বকেয়া ক্ষতিপূরণ চাষিদের দিতে হবে। সাবমার্সিবলে ক্ষতির জন্য কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, তার তালিকাও প্রকাশ করতে হবে। কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ দাবিগুলি মেটানোর আশ্বাস দেওয়ায় আন্দোলন সাময়িক ভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে দাবি না মিটলে ফের আন্দোলন হবে। বিডিও (বড়জোড়া) সুরজিৎ পণ্ডিত বলেন, “মার্চের মধ্যেই চাষজমির ক্ষতিপূরণের এক বছরের বকেয়া টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ। সময় পেরোলেও কেন তা দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।”
বড়জোড়ার ওই কোলিয়ারি পরিচালনের দায়িত্বে রয়েছে ডিপিএল। কোলিয়ারির এজেন্ট অমলকৃষ্ণ কর্মকারের দাবি, “আন্দোলনের জেরে এ দিন খনির কাজ হয়নি। সন্ধ্যার পরে কাজ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। নিদির্ষ্ট সময়ে চাষিদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যায়নি। শীঘ্র বকেয়া থাকা এক বছরের টাকা মেটানো হবে। বাকি টাকাও নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়া হবে।” এ ছাড়া, সিপিএমের তরফে তোলা ওই চাষজমি দ্রুত অধিগ্রহণের দাবিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ।