লক্ষ্য— দলের কর্মীদের ‘লড়াকু’ মানসিকতা ফিরিয়ে আনা। লোকসভা ভোটের আগে তাই প্রত্যেক পার্টি সদস্যের জন্য দলের আদর্শ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করল সিপিএম। আগামী সোমবার থেকে বাঁকুড়া জেলায় ক্লাস শুরু হতে চলেছে। ধাপে ধাপে সেটা এরিয়া ও শাখা কমিটিতেও ছড়িয়ে ফেলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরে বাঁকুড়ায় সিপিএমের সদস্য সংখ্যাও ক্রমশ কমে চলেছে। দল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে জেলায় সদস্য সংখ্যা ছিলেন প্রায় ১৩ হাজার জন। ২০১৭ সালে সেটা কমে হয় ১২,৮০০। ২০১৮ সালে আরও কমে ১১,২০০।
দলের কিছু নেতাই বলছেন, পার্টি ক্লাসের ব্যাপারটা অনেক বছর হল প্রায় নিয়মরক্ষায় দাঁড়িয়েছিল। কয়েক বছর আগে কলকাতায় হওয়া প্লেনামে ঠিক করা হয়েছিল, কর্মীরা যাতে পার্টি ক্লাসের ব্যাপারে আন্তরিক হন সেটা দেখতে হবে। লোকসভা ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে কড়া হয়েছে দল। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “দলের প্রত্যেক সদস্যকেই বছরে অন্তত পাঁচটি আদর্শগত ক্লাস করতে হবে। রাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৮০ জন শিক্ষক রয়েছেন জেলায়। সোমবার রাজ্যের শিক্ষকেরা এসে আগে তাঁদের ক্লাস নেবেন। তার পরে জেলার ওই শিক্ষকেরাই দলীয় সদস্যদের ক্লাস নেওয়া শুরু করবেন।”
সিপিএম সূত্রের খবর, ক্লাসের সিলেবাসও ঠিক করে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। কমিউনিস্ট পার্টি কী ও কেন, মার্ক্সিয় দর্শন, মার্ক্সিয় অর্থনীতি, দলীয় কর্মসূচি ও সংগঠনগুলির কাজ— মূলত এই বিষয়গুলিই পড়ানো হবে। সিপিএমের এক জেলা নেতা বলেন, “রাজ্যে ক্ষমতা হারানো ও একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবির জেরে দলের সদস্যদের একটা বড় অংশের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। দলের লক্ষ্য, ফের তাঁদের বিপ্লবী মানসিকতা গড়া।’’
সিপিএম সূত্রের খবর, দলের বহু সদস্যই আয় অনুসারে দলকে সময় মত লেভি দিচ্ছেন না। আন্দোলনে বিমুখতা, গণসংগঠনের কাজে যোগ না দেওয়া, পার্টি পত্রিকা পড়ার প্রবনতাও অনেকের মধ্যে কমেছে বলে নজরে এসেছে। এই সব নেতাদের চিহ্নিত করে জেলা নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধন্ত নিয়েছে। অজিতবাবু জানিয়েছেন, নভেম্বর জুড়ে দলীয় সদস্য সংখ্যা বাড়ানো ও জেলা জুড়ে বাড়ি বাড়ি গণসংগ্রহে যাওয়ায় জোর দিচ্ছেন তাঁরা।