চাহিদা বাড়ছে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল বা এসইউভি-র। ছবি: সংগৃহীত।
গত ক’বছরে দেশে ক্রমশ কমছে ছোট-মাঝারি গাড়ির বিক্রি। উল্টে দখল বাড়ছে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল বা এসইউভি-র। তাদের মধ্যে আবার এগিয়ে ৪ মিটারের কম দৈর্ঘ্যের গাড়ি (প্রায় ৬০%)। এই সুযোগে সেই ইউভি-র বাজার ধরতেই এ বার ঝাঁপাচ্ছে গাড়ি সংস্থাগুলি।
শিল্পের তথ্য বলছে, অগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশে মোট গাড়ি বিক্রি কমেছে ১০%-১৫%। তখনই ইউভি-র বেড়েছে ১০%-১২%। মূলত এক শ্রেণির তরুণ প্রজন্মের বদলে যাওয়া পছন্দ এবং জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই বাহন কেনার চাহিদাই তাঁদের এই ধরনের গাড়িতে উৎসাহী করে তুলেছে। আবার করোনার পরবর্তী জমানায় চড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে হাত গুটিয়ে মূলত ছোট গাড়ির ক্রেতারা। ফলে সেগুলির বিক্রি ধাক্কা খাচ্ছে। তাই বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেজো গাড়ি তৈরিতে জোর দিচ্ছে গাড়ি শিল্প।
সিয়াম জানাচ্ছে, দেশে এপ্রিল-অক্টোবরে এসইউভি তৈরি হয়েছে ১৪.৫% বেশি। ছোটর কমেছে ১৫.৭%। পাশাপাশি, এসইউভি-র বিক্রি ১৩.৩% বেড়েছে। ছোট গাড়ির কমেছে ১৮.৪%। উৎসবের মরসুমে শুধু অক্টোবর ধরলেও ছবিটা একই। সংগঠনের ডিজি রাজেশ মেনন বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে বিক্রি তেমন বাড়েনি। তবে এসইউভি-র ছবিটা পুরো উল্টো, বিক্রি বিরাট বেড়েছে। তরুণ প্রজন্মের হাতে টাকা থাকাই যার কারণ।’’
গাড়ি সংস্থাগুলির তথ্যেও বিক্রির এই প্রবণতা স্পষ্ট। যেমন, অক্টোবরে মারুতির ছোট-মাঝারি গাড়ি বিক্রি গত বছরের ৯৫,০০০ থেকে কমে হয়েছে প্রায় ৭৭,০০০টি। ইউভি-র প্রায় ১২,০০০ বেড়ে পৌঁছেছে ৭১ হাজারের কোঠায়। হুন্ডাই মোটরসের শীর্ষকর্তা তরুণ গর্গ বলছেন, গত মাসে বিক্রি হওয়া গাড়ির ৬৮% ইউভি। মহিন্দ্রাঅ্যান্ড মহিন্দ্রা, টাটা মোটরস, টয়োটার ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে সেই ছবি।
মহিন্দ্রার গাড়ি বিভাগের সিইও নলিনীকান্ত গোল্লাগুন্টা বলেন, ‘‘তরুণ প্রজন্ম এমন গাড়ি কিনছেন, যা তাঁদের জীবনযাপন ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। তাই ৪ মিটার কম দৈর্ঘ্যের এসইউভি-র বিক্রি বাড়ছে।’’ একই কথা জানাচ্ছেন স্কোডা অটো ইন্ডিয়ার সিইও পীযূষ অরোরাও।
আর গাড়ি ডিলারদের সংগঠন ফাডা সভাপতি সি এস বিজ্ঞেশ্বরের বক্তব্য, দেশে যত গাড়ি বিক্রি হয়, তার ৪০%-৪৫% ইউভি। ফলে সব সংস্থার নজরই এ দিকে। এই কারণেই মহিন্দ্রা, কিয়া, স্কোডা, টয়োটার মতো যারা মূলত ইউভি গাড়ি তৈরি করে, তাদের বিক্রি বৃদ্ধির হার অন্যদের চেয়ে বেশি।