রামপুরহাটে মিছিল। নিজস্ব চিত্র
রামপুরহাট পুরসভা, বিশেষ করে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগে সরব হল বামফ্রন্ট। শনিবার বিকেলে রামপুরহাট শহর এলাকার সিপিএম নেতৃত্ব সহ ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বামফ্রন্টের অন্য শরিক দলের নেতাকর্মীরা মিছিল করেন। নেতৃত্ব দেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মন। মিছিল থেকে পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্প ধরে ধরে দুর্নীতির উল্লেখ করে শ্লোগান দেওয়া হয়।
সঞ্জীববাবুর অভিযোগ, ‘‘রামপুরহাট পুরসভায় সীমাহীন দুর্নীতি চলছে। এর প্রতিবাদে শহরের মানুষকে গর্জে উঠতে হবে। তাই বামফন্টের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ, মিছিল সহ শহরে নানা বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত হচ্ছে। আগামী দিনেও হবে।’’ তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত এ নিয়ে কোথাও লিখিত অভিযোগ হয়নি।
সিপিএমের অভিযোগ, পুরসভা এলাকায় শ্রীফলা থেকে সুন্দিপুর পর্যন্ত রাস্তার ধারে নতুন আলো বসানোর জন্য পুরসভা কাজ শুরু করেছে। ওই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত কাজ হয়নি। সঞ্জীববাবুর অভিযোগ, ‘‘ওই প্রকল্পে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দুর্নীতি হয়েছে।’’ সিপিএমের অভিযোগ, ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পুরসভার চাকরি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্রিনসিটি প্রকল্পে সামান্য কাজ করে ৪ কোটি টাকা দুর্নীতিরও অভিযোগ করেছেন সিপিএমের সঞ্জীববাবুর। বামফ্রন্ট নেতৃত্বের অভিযোগ, পুরপ্রধান এবং অন্য কাউন্সিলরদের জন্য রামপুরহাট পুরসভা ৩৬ লক্ষ টাকার গাড়ি কিনেছেন। পুরবাসীর করের টাকায় কী ভাবে পুরপ্রধান, কাউন্সিলররা এতটা বিলাসিতা করার সাহস পান সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। আরও অভিযোগ, নিশ্চিন্তপুরের কাছে জঞ্জাল ফেলার জন্য যে জায়গা পুরসভা কিনেছে, তা পুরপ্রধান ব্যক্তিগত মালিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন।
সিপিএমের পক্ষ থেকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিককে কোনও উন্নয়ন মূলক কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয় না। পুরপ্রধান নিজে ওই ওয়ার্ডে কাজ করাচ্ছেন। তার পরেও ওয়ার্ডে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি নালা পরিস্কার করা হচ্ছে না। পথবাতি লাগানোর ব্যাপারেও পুর কর্তৃপক্ষ উদাসীন। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা না করে পুরপ্রধান খেয়াল, খুশি মতো গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির প্রকল্পে উপভোক্তাদের তালিকায় প্রকৃত প্রাপক নাম তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন বলেও সরব হয়েছে সিপিএম। অভিযোগ তোলা হয়েছে, পুরসভার গেস্ট হাউসগুলির নজরদারি নিয়েও। অবিলম্বে অভিযোগগুলি তদন্তের দাবি জানান বামফ্রন্ট নেতৃত্ব।
অভিযোগ-মালা প্রসঙ্গে পুরপ্রধানের জবাব, ‘‘১৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার যাবতীয় উন্নয়ন মূলক কাজ হচ্ছে। কাউন্সিলরের উচিত সেই কাজ হচ্ছে কি না দেখে নেওয়া। কাউন্সিলরকে বাদ দিয়ে কাজ হচ্ছে বলে ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’ বাকি অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্যই করতে চাননি পুরপ্রধান।