শিবপুের জমিদাতা কৃষকদের সভায় এসে প্রতিবন্ধী এক সমর্থকের সঙ্গে মঞ্চে কথা বলছেন সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। রবিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল বাম আমলে। সেই জমিতে শিল্পের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চললেও কিন্তু আজও বোলপুরের শিবপুর মৌজায় শিল্প গড়ে ওঠেনি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শিল্পের দাবিতে রবিবার শিবপুরের জমিদাতা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও শাসক দলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ও কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। যদিও বিষয়টি গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।
বীরভূমে এসে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলকে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ দিন সেই প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে মীনাক্ষী বলেন, ‘‘কে বাঘ কে ইঁদুর আমাদের দেখে লাভ নেই। বাঘ যদি মানুষখেকো হয়,তাহলে বাঘের চামড়া গা থেকে খুলে দেওয়ালে ঝোলাতেও মানুষ জানে।”
অনুব্রতর চালকল নিয়ে কটাক্ষ করে মীনাক্ষী বলেন, ‘‘চালকলে ধান ঢুকছে কিন্তু চাল বেরোচ্ছে না। তার পরিবর্তে বেরোচ্ছে বড় বড় গাড়ি। এই রকম মিলের মালিক হতে আমরা চাই না। নেতাদের ফুর্তি করতে দেব না। অপার মতো বাগানবাড়ি বানাতেও দেব না শিবপুরের জমিকে। তাই আরও সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যার গ্রেফতার হওয়া প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই সরকার এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করেছে যে ওঁর মেয়েও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গিয়েছে।”
তৃণমূল ও বিজেপিকে এক সুরে আক্রমণ করেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, “আজ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিজেপি তৃণমূলের বোঝাপড়া চলছে।’’ বিজেপিকে আক্রমণ করে মীনাক্ষীর অভিযোগ, ‘‘হাজার হাজার শিবির চলছে আরএসএসের। সেখানে অস্ত্র চালনা, মানুষে মানুষে বিভেদ শেখানো হয়।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করানোর দাবিও এদিন রাখেন মীনাক্ষী।
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের পাল্টা অভিযোগ, “কেবল রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে তারা শিবপুরের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জমি আমরা অধিগ্রহণ করিনি। বাম আমলেই অধিগৃহীত হয়েছিল অথচ সেখানে তারা কিছুই করেনি। আমাদের সরকার সেখানে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প করেছে।”
এ দিনের সভায় মীনাক্ষী, আব্দুল মান্নান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জমিদাতা কৃষকসংগ্রাম মঞ্চের প্রতিনিধি মির্জা জসীমউদ্দীন, শৈলেন মিশ্র, কংগ্রেস নেতা তপন সাহা-সহ জমি নিয়ে আন্দোলন করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।