পুরুলিয়ার হুচুকপাড়া মণ্ডপে নিয়ম ভেঙে চলল সিঁদুর খেলা। পুজোয় ভিড় ছিল।
পুজো দেখতে লাগামছাড়া ভিড় ও অসাবধানতায় বাড়তে পারে করোনা সংক্রমণ। পুজোর পরে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার চিকিৎসক মহল।
চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরর্স ফোরামের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, “পুজোয় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। বহু মানুষই মাস্ক ব্যবহার করেননি। এতে সংক্রমণের মাত্রা লাগাম ছাড়াবে বলে আমাদের আশঙ্কা।” তাঁর সংযোজন, “এই পরিস্থিতিতে করোনা পরীক্ষা সীমিত করে দিলে চলবে না। পরীক্ষা আরও বাড়ানোর দাবি শীঘ্রই আমরা রাজ্য সরকারের কাছে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” বাঁকুড়া মেডিক্যালের এক চিকিৎসক বলেন, “পুজোর ভিড় দেখে আমরা খুবই চিন্তিত। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা হয়তো আমরা অনুমানও করতে পারছি না।”
বাঁকুড়া জেলার স্বাস্থ্য-কর্তাদের একাংশ অবশ্য এখনই অতটা আতঙ্কিত হতে নারাজ। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “করোনা সংক্রমণের হার বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। পরিস্থিতির উপরে আমরা নজর রাখছি।” তবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন। তিনি জানান, জেলার এক মাত্র কোভিড হাসপাতাল ওন্দা সুপার স্পেশালিটিতে একটি হাই ডিপেডেন্সি ইউনিট গড়া হচ্ছে। সেখানে ৪০টি শয্যা থাকবে। শ্যামলবাবু বলেন, “পুজোর পরে সংক্রমণের হার বাড়লে, রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি আমরা সেরে রাখছি। দৈনিক গড়ে প্রায় ১,৪০০ জনের করোনা নির্ণয় পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে পরীক্ষা বাড়ানোর বিষয়ে ভাবব।” বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “পুজোয় কোথায় কেমন ভিড় হয়েছে, তা আমাদের নজরে আছে। করোনা সংক্রমণ বাড়ছে কি না, তার আভাস আগামী কিছু দিনের মধ্যেই মিলবে। তারপরেই যা পদক্ষেপ করার করা হবে।”
পুরুলিয়া জেলায় ভিড় অন্য বারের থেকে এ বার কম হলেও তা নিয়ে উদ্বেগ কম নেই বলে জানাচ্ছেন অনেকে। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সপ্তমী ও অষ্টমীতে জেলার কোথাও তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। কিন্তু নবমীর দিন রাস্তাঘাটে ভালই ভিড় ছিল। ভিড় থেকে যে সংক্রমণ ছড়ায়নি, সে নিশ্চয়তা কোথায়! কেরলের ঘটনা থেকে আমরা কোনও শিক্ষা নিলাম না। সময়ই বলবে, এখানে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে।’’ তবে পুলিশ-সহ উদ্যোক্তাদের দাবি, দিনভর বার বার দূরত্ব-বিধি মেনে চলা, ভিড় না করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
পুরুলিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘পুজোর দিনগুলিতেও করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতি ব্লকের বিএমওএইচদের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’