Coronavirus in West Bengal

কেন বাইরে থেকে ফিরেও চুপ, উদ্বেগ

আন্তঃজেলা সীমান্ত সিল করা আছে, তার পরেও কিছু মানুষ নজর এড়িয়ে ঢুকছেন এবং কোয়রান্টিন এড়িয়ে বেমালুম সেটা চেপে থাকছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ০৩:০১
Share:

আটকে দেওয়া হয়েছে বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানা। সিউড়ির কেঁদুলি গ্রাম সংলগ্ন চেকপোস্টে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

পাশে রয়েছে দেশ ও রাজ্যের সরকার। লড়াইয়ে জান লড়িয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে পুলিশ প্রশাসন। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আমজনতার সচেতনতা যে সবচেয়ে জরুরি, সেটা আর কবে বুঝবেন মানুষ। প্রতিদিন থলি হাতে বাজার যাওয়ার হিড়িক আছে। নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, রেশনের দোকানের সামনে লাইন আছে। এখনও মাস্ক না পরে বাইরে ঘোরা আছে। লকডাউনের মধ্যে পুলিশের নজর এড়িয়ে চলছে আড্ডাও। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রবণতা হল, ভিন্ রাজ্য এবং মারাত্মক ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এমন জেলা থেকে ফিরে বেমালুম চেপে যাওয়ার চেষ্টা। দিন তিনেকের মধ্যে ছোট্ট পুরশহর দুবরাজপুরে তেমন বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে এক সকালে ভিন্ জেলা থেকে বোনকে বাইকে চাপিয়ে ভোরবেলায় দুবরাজপুরে নিয়ে এসেছিলেন এক ব্যবসায়ী। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে কথা জানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। একই ভাবে ভিন্ রাজ্য থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে এক ক্যানসার আক্রান্তকে চিকিৎসা করিয়ে দুবরাজপুরের বাড়িতে সপরিবার ফিরে বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন আর এক বাসিন্দা। বাইরেও ঘোরাঘুরিও করছিলেন। এখানেই শেষ নয়। দুবরাজপুরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রেড জোনে থাকা হাওড়া থেকে এসে দিব্যি ব্যাঙ্কে কাজকর্ম করছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ স্বাস্থ্য দফতর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রত্যেককেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। সঙ্গে হুঁশিয়ারি। নিয়ম ভাঙলে নন হোম কোয়রান্টিনে পাঠাতে দেরি করবে না পুলিশ।

প্রশ্নটা উঠছে সেখানেই। গোটা বিশ্বে দেড় লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছেন। দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে সেটাও প্রায় দু’মাস হতে চলল। এ রাজ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এক মাসেরও বেশি। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যু। বেশ কয়েকটি জেলাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর কবে কী ভাবে সচেতন হবেন মানুষ। পুলিশ জানিয়েছেন, চূড়ান্ত নজরদারি রয়েছে। আন্তঃজেলা সীমান্ত সিল করা আছে, তার পরেও কিছু মানুষ নজর এড়িয়ে ঢুকছেন এবং কোয়রান্টিন এড়িয়ে বেমালুম সেটা চেপে থাকছেন। এতে শুধু নিজের নয়, বিপদ হতে পারে পরিবারের এমনকি পড়শিরও।

Advertisement

প্রশাসনের কর্তারা মনে করাচ্ছেন, এই প্রবণতা প্রথম থেকেই চলছে। কখনও বিদেশ থেকে ফিরে, কখনও ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে বহু মানুষ চুপ করে থেকে গিয়েছিলেন। এমন বহু উদাহরণ রয়েছে।

বিদেশ থেকে ফিরে বা ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেও রীতিমতো ঘুরে বেরিয়েছেন কেউ কেউ। বেশ কয়েক দিন পরে সে কথা জেনে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। নিয়মিত স্বাস্থ্য দফতর থেকে খোঁজ রাখা হয়েছে।

বীরভূমে এখনও সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও ঘটনা সামনে আসেনি। কিন্তু, অনেকেরই মত এমন প্রবণতা চললে জেলাকে সুস্থ রাখা দুষ্কর হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘একটা কথা বলতে দ্বিধা নেই। এই ঘটনা মূলত ঘটাচ্ছেন শিক্ষিতরাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement