গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ট্যাব কেলেঙ্কারিতে এর আগে শিক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন। এ বার গ্রেফতার হল এক কলেজ ছাত্র। তারও বাড়ি উত্তর দিনাজপুরে। পাশাপাশি, বিহারের কিসানগঞ্জে ১২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এই অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করেই ট্যাবের টাকা সরানো হয়েছে বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।
ট্যাব-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে কলেজ ছাত্র, বছর তেইশের উমর ফারুককে গ্রেফতার করেছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। ইসলামপুর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারুক। চোপড়া থানার দক্ষিণ আমতলায় বাড়ি। পুলিশের দাবি, ঝাড়গ্রামে ট্যাবের টাকা হাতানোর মূল চক্রীদের অন্যতম ফারুক। ঝাড়গ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) গুলাম সরওয়ার বলেন, “ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে।”
ট্যাব দুর্নীতিতে জড়িত অভিযোগে চোপড়া থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে রানাঘাট ও হুগলি সাইবার অপরাধ দমন শাখার পুলিশও। বৃহস্পতিবার রাতে চোপড়া থানার সোনাপুর দাসপাড়া ও ঘিরনিগাঁও থেকে ফারুক আজম ও গুলজ়ার আলিকে গ্রেফতার করা হয়। ফারুকের বাড়ি চোপড়ার হাফতিয়ায়, গুলজ়ার স্থানীয় দাসপাড়ার ধন্দিগছের বাসিন্দা।
ওই রাতেই রানাঘাট পুলিশ চোপড়ার রৌসদিগছ থেকে জাহাঙ্গির আলম নামে আর এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জাহাঙ্গিরের বাড়িতে একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র চলত। সন্দেহ, জাহাঙ্গির ওই কেন্দ্র চালানোর সুযোগ নিয়ে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে সরিয়েছে। ফারুক, গুলজ়ারের অ্যাকাউন্টেও জমা পড়েছে ট্যাবের টাকা। তারা মোটা টাকায় অ্যাকাউন্ট ভাড়া দিয়েছিল।
কিসানগঞ্জে আরও ১২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে পুলিশ। এই অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করেই ট্যাবের টাকা প্রতারণা করা হয়েছে বলে দাবি। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংহ নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করে। বাড়ি কিসানগঞ্জে। ওই ব্যক্তির ফটোকপির দোকান রয়েছে। সে ‘মিডল ম্যান’ হিসেবে কাজ করত। প্রতারণার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংগ্রহে দু’জন যুবককে নিয়ে কাজ করেছিল রবীন্দ্র। ওই দু’জনেরও খোঁজ করছে পুলিশ।
ট্যাব প্রতারণার মামলায় এখনও পর্যন্ত ধৃতের সংখ্যা ৩২। শুক্রবার আরও ৩০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করেছে বিভিন্ন জেলার পুলিশ। এই নিয়ে দু’দিনে পুলিশ ১২২০টি অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করল। এই অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করেই প্রতারকেরা টাকা সরিয়েছিল। ভবানী ভবন সূত্রে খবর, ওই সব অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ‘ব্লক’ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরাতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। কিছু আদালত তা মঞ্জুরও করেছে।
শুক্রবার আবার হাওড়ার বাসিন্দা অশোক মান্না তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়া ট্যাবের টাকা ফেরাতে চেয়ে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। পেশায় শ্রমিক ওই ব্যক্তির দাবি, অক্টোবরের গোড়ায় তাঁর অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা ঢোকে। কিসের টাকা, প্রথমে বোঝেননি তিনি। সম্প্রতি উলুবেড়িয়ার বাণীবন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে ফোনে তাঁকে বলা হয়, তা এক ছাত্রীর ট্যাবের টাকা। তা যেন ফেরত দেওয়া হয়। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক মানসকুমার মণ্ডল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।