প্রতীকী ছবি
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ফিভার আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন পঞ্জাবের এক যুবকের মৃত্যু হল। শনিবার গভীর রাতের ঘটনা।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃতের বাড়ি পঞ্জাবের তাপামান্ডি থানার তোয়েণ্ডা গ্রামে। পেশায় গম-কাটা যন্ত্রের অপারেটর ছিলেন। লকডাউনের আগে ওই যুবক মুর্শিদাবাদের ডোমকল হয়ে বীরভূমের মুরারই থানার রতনপুর এলাকায় গম কাটতে এসেছিলেন। মুরারই থানার অন্য এক গ্রামে ছিলেন। চলতি মাসের ২ তারিখ সকালে মাঠে গম কাটার কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে প্রথমে মুরারই ১ ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই শনিবার মৃত্যু হয়।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, ওই যুবকের শ্বাসকষ্ট সহ জ্বর-কাশির উপসর্গ ছিল। বাইরে থেকে আসার জন্য করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে প্রথমে মেডিক্যালের করোনা সন্দেহজনক আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৩ এপ্রিল যুবকটির জিভ এবং নাক থেকে দুই ধরণের লালারস পরীক্ষা করার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়। তিন দিন পরে নাইসেড থেকে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেও যুবকের বুকের পরীক্ষায় টিবি রোগ ধরা পড়ায় করোনা সন্দেহজনক আইসোলেশন বিভাগ থেকে মেডিক্যাল কলেজের অধীন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ফিভার আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, যুবকটির ফুসফুসে মারাত্মক আকারে টিবি ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে। তবে যুবকের মারা যাওয়ার আগেই আর একবার লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট অবশ্য এখনও জানা যায়নি। যুবকের দেহ আপাতত হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা সন্দেহজনক আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি হওয়ার আগে মুর্শিদাবাদে কাজ করার সময় বহরমপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে ছুটি পাওয়ার পরে কাজে মুরারই এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই যুবকের সঙ্গী, পঞ্জাবের আরও এক যুবককে রামপুরহাট শহরের একটি নন হোম কোয়রান্টিনে পর্যবেক্ষণে রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি মুরারই থানা এলাকার যে বাড়িতে ওই যুবকের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেই পরিবারের ১২ জন সদস্যকেও হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।