সুব্রত পতি। নিজস্ব চিত্র
নদীর ধারে উঁচু নিম গাছে মাচা বাঁধা। ঘড়িতে সকাল সাড়ে ৯টা বাজলেই বই, খাতা, খাবার, জল নিয়ে তাতে উঠে পড়েন সুব্রত পতি। তার পরে মোবাইলে শুরু হয়ে যায় ক্লাস। বেহাল নেটওয়ার্কের কারণে ঘরের বদলে গাছের মগডাল থেকেই চলছে কলকাতার একটি চাকরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক সুব্রতবাবুর ‘অনলাইন ক্লাস’।
বাঁকুড়ার ইঁদপুরের আহন্দা গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের সুব্রতবাবু লকডাউনে গ্রামের বাড়িতে এসে আটকে পড়েন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। তবে তাতে কি পড়াশোনা বন্ধ থাকবে? তাই অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা নেন তিনি। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা তো দূর, মোবাইলে নেটওয়ার্কও ঠিকমতো মেলে না। তাঁর দু’টি আলাদা সংস্থার ‘সিম’ থাকলেও একই অবস্থা। তাই বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রামের মাঠ পেরিয়ে উঁচু নিম গাছে মাচা বেঁধে পড়ানোর প্রস্তুতি নেন। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘এখান থেকে ভাল সিগন্যাল মেলে। রোজ সকাল থেকে ক্লাস চলছে। কখনও কখনও বিকেলেও ক্লাস থাকে। ছাত্রছাত্রীদের তরফে ভাল সাড়া পাচ্ছি।’’
বিএসএনএল-এর বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট টেলিকম ম্যানেজার অমৃতলাল খাটুয়া বলেন, ‘‘সোমবার ঝড়-বৃষ্টির জন্য ইঁদপুর ব্লকে সাময়িক ভাবে পরিষেবা ব্যাহত হয়। মেরামতি চলছে।’’ ওই গ্রামের সমস্যা নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবারের ঝড়-জলে মাচারও ক্ষতি হয়েছে। তবে তাতেও দমেননি সুব্রতবাবু। মাচার মেরামতিতে ব্যস্ততার মধ্যে জানান, সকালের ক্লাসটা ‘মিস’ গেল। বিকেলে বেশিক্ষণ পড়িয়ে দেবেন।