প্রতীকী ছবি
এপ্রিলের শুরুতে সংখ্যাটা ছিল কুড়ি হাজারের কাছাকাছি। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় ‘হোম কোয়রান্টিন’ রয়েছেন ১,১৭৪ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাকিরা নির্ধারিত সময় বাড়িতে কাটানোর পরেও, করোনাভাইরাসের কোনও উপসর্গ তাঁদের শরীরে দেখা দেয়নি।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, ‘‘তাঁরা আপাতত পরিবারের অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারবেন। কিন্তু কোনও ভাবেই যত্রতত্র ঘুরতে পারবেন না। সেটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ ভিন্ রাজ্যে পুরুলিয়ার প্রচুর শ্রমিক কাজ করেন। ‘লকডাউন’ শুরুর পরেই তাঁরা দলে দলে ফিরে আসতে শুরু করেন।
পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) তথা করোনা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিন-এ থাকা লোকজনের সংখ্যা কমছে। এটা ইতিবাচক দিক।’’ তিনি জানান, ‘হোম কোয়রান্টিন’ করা লোকজনের প্রায় নব্বই শতাংশই বিদেশ বা অন্য রাজ্য থেকে ফেরা। বাকি দশ শতাংশ বাইরে না গেলেও সর্দি বা জ্বরের মতো উপসর্গ ছিল। তাঁদের অনেকেই ‘ফ্লু ক্লিনিক’-এ চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, জেলার প্রায় সমস্ত ব্লকেই ‘হোম কোয়রান্টিন’ থাকা মানুষের সংখ্যা গড়ে হাজারের কাছাকাছি ছিল।
সব থেকে বেশি হয়েছিল কাশীপুরে। বেশি ছিল পাড়া, পুরুলিয়া, মানবাজারের মতো কিছু এলাকাতেও। বাইরের লোকজন তো বটেই, পরিবারের কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেও মানা করা হয়েছিল ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা লোকজনকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নির্দেশ না মানার খবর আসে। এই নিয়ে ক্রমশই মাথা ব্যথা বাড়ছিল প্রশাসনের।
জেলার কয়েকজন বিডিও বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিন থাকা লোকজন বাইরে বেরিয়ে গ্রামের পাঁচ জনের সঙ্গে মিশছেন বলে প্রায়ই খবর আসছিল। সঙ্গে সঙ্গে আশাকর্মী, এএনএম, সিভিক ভলান্টিয়ারদের গ্রামে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আবার ওই সব লোককে ঘরে বন্দি করে রেখে এসেছেন।’’ ওই সমস্ত লোকজনের অধিকাংশেরই উপসর্গ দেখা না দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। তবে কিছু ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হলেও উপসর্গ চোখে পড়ে না। তাই ঝুঁকি না নিয়ে তাঁদের যতটা সম্ভব বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে।
আকাঙক্ষাদেবী জানাচ্ছেন, এখন অন্য ব্লক থেকে কেউ বাড়িতে ফিরলে ‘হোম কোয়রান্টিন’ করে রাখা হচ্ছে। আর ভিন্ রাজ্য থেকে জেলায় এলে পাঠানো হচ্ছে প্রশাসনিক ‘কোয়রান্টিন’-এ।