প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-এর মধ্যেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাঁকুড়া আর পুরুলিয়ার কিছু এলাকা।
পুরুলিয়ার জেলা বিজ্ঞানকেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, বুধবার বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে ভূমিকম্প টের পাওয়া যায়। চলে কয়েক সেকেন্ড। আইআইটি খড়্গপুরের ভূ-তত্ত্ব ও ভূ-পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ জানান, ভূমিকম্পের উৎস দুর্গাপুর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে, মাটির ১৫ কিলোমিটার নীচে, গড়ময়না-খণ্ডঘোষ চ্যুতি বা ফল্টে। রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৪.১।
শঙ্করবাবু জানিয়েছেন, গত বছরখানেকের মধ্যে এই গড়ময়না-খণ্ডঘোষ চ্যুতি থেকে একাধিক ভূমিকম্প হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১টা ৩৩ মিনিটে (রাত ১২টা পেরিয়ে যাওয়ায় সরকারি হিসেবে ৮ এপ্রিল) সিকিমেও একটি ৩.২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় প্লেট ক্রমাগত ইউরেশীয় প্লেটের তলায় ঢুকছে। তার পরে যে চাপ তৈরি হচ্ছে, তার শক্তি এই গড়ময়না-খণ্ডঘোষ বা কলকাতার তলায় থাকা ইয়োসিন হিঞ্জ-দেশের নানা চ্যুতিতে জমা হচ্ছে। আর তার ফলেই এগুলি সক্রিয় হয়ে রয়েছে।’’ সেই সঞ্চিত শক্তি মুক্ত হওয়ার ফলে বার বার ভূমিকম্প হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এ দিন সকালে হঠাৎ ‘ভোঁ-ভোঁ’ করে শব্দ শুরু হয়। তার পরেই কেঁপে ওঠে মাটি। কিছু লোকজনকে তড়িঘড়ি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে ‘লকডাউন’-এর মধ্যে সে সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। অনেকে শাঁখ বাজাতে শুরু করেন।
রঘুনাথপুরের বাসিন্দা দুর্গাদাস ঘটক বলেন, ‘‘ওষুধের দোকানে ছিলাম। হঠাৎ মাটি কেঁপে ওঠে।’’ কাশীপুরের একটি ওষুধের দোকানের কর্মী উজ্জ্বল মোদকের কথায়, ‘‘টুলে চেপে ওপরের তাক থেকে ওষুধ নামাচ্ছিলাম। মাটি কেঁপে উঠতেই লাফ দিয়ে নেমে পড়ি।”
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভূমিকম্পে জেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাইনি। তবে সমস্ত ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনও খবর পেলেই দ্রুত জানাতে।’’ পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনও জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর নেই।