ছবি: পিটিআই।
কলকাতা থেকে ফিরে করোনা আক্রান্ত হলেন দুবরাজপুরের এক যুবক। বছর আঠাশের ওই যুবকের বাড়ি দুবরাজপুর শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডে। সোমবার গভীর রাতে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা পজ়িটিভ হওয়ার রিপোর্ট আসে।
তবে, আক্রান্ত ওই যুবককে কোভিড হাসপাতালে পাঠাতে মঙ্গলবার বিকেল গড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে পড়শি-পরিজনেদের। তাঁদের প্রশ্ন, বীরভূমে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই। তবে, সংক্রমণের হার যথেষ্ট কম। তার পরেও কেন আক্রান্তকে হাসপাতালে পাঠাতে এতটা সময় নেবে প্রশাসন? এতে তো আরও সংক্রমণের ভয় বাড়ে। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘দেরির প্রশ্ন নয়। আক্রান্তের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ও অন্যান্য ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগে। ওই যুবককে বোলপুর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’
আক্রান্তের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্যাশন ডিজ়াইনের সঙ্গে যুক্ত ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতায় কর্মরত। করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে বাড়িতেই ছিলেন। আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে কিছুদিন আগেই ফের কলকাতার কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সামান্য জ্বর নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে ফিরে নিজেকে বাড়িতেই আবদ্ধ রেখেছিলেন। দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে শনিবার লালারসের নমুনা দেন। ওই যুবকের শরীরে করোনাভাইরাসের হদিস মিলেছে— মঙ্গলবার সকালে এ কথা ছড়িয়ে পড়তেই পরিবার ও পড়শিদের উৎকন্ঠা বাড়ে। তার পরেই দুবরাজপুর থানার পক্ষ থেকে আক্রান্তের বাড়ির সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়। ভয়ে পাড়ায় লোকজন বাড়ি থেকে বাইরে বেরোনো বন্ধ রেখেছেন।
বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘আক্রান্তের বাবা-মা-ভাই, কাকু, কাকিমা, তুতো ভাইবোন এবং জেঠু-জেঠিমা সহ মোট ১১ জনকে বক্রেশ্বরে সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। আরও কে কে আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।’’
মুরারই ১ ব্লকের এক মহিলাও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সূত্রের খবর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট, জ্বরের উপসর্গ থাকা বছর আটত্রিশের ওই মহিলাকে মঙ্গলবার ভর্তি করানো হয় রামপুরহাট কোভিড হাসপাতালে। বুধবার তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। আক্রান্ত মহিলা এলাকাতেই ছিলেন। ভিন্ রাজ্য তো দূর, অন্য জেলাতেও যাননি। দিন পাঁচেক আগেই মুরারইয়ে বাহাদুরপুর গ্রামের এক যুবকেরও করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁরও ভিন্ জেলা বা রাজ্যে যাওয়ার ইতিহাস নেই। অবস্থায় অবনতি হওয়ায় সম্প্রতি তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে খবর।
পরপর দুটি ঘটনায় বিপদ দেখছেন এলাকার অনেকেই। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, করোনা নিয়ে এত প্রচার চললেও অনেকেই বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে মাস্ক ছাড়া বাজার ও রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মুরারই পুলিশ এ দিন ভাদীস্বরে অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে সতর্ক করে বাড়ির নাম ঠিকানা ও ফোন নম্বর লিপিবদ্ধ করেছে। বিডিও (মুরারই ১) নিশীথভাস্কর পাল বলেন, ‘‘আক্রান্তদের বাড়ির চারদিক বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।’’