‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক দিনে পুরুলিয়া শহরে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বাসিন্দা ও লাগোয়া ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তিন জনের ক্ষেত্রেই বিয়েবাড়ি থেকে সংক্রমণ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে প্রশাসন। এক জনের সরাসরি বিয়েবাড়ি যোগ রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট না হলেও ওই আক্রান্তের এক আত্মীয় ওই বিয়েবাড়িতে হাজির ছিলেন বলে খবর। সোমবার শহরের ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’গুলি ঘুরে দেখার পরে, জেলাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরা শহরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
রবিবারই শহরের প্রাণকেন্দ্রে দু’টি ওয়ার্ডের তিনটি বাড়ি-সহ কিছুটা এলাকা ঘিরে তিনটি আলাদা ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ তৈরি করা হয়েছে। জ়োনের ঘেরাটোপে থাকা এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘যেহেতু একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানের পরেই তিন জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাই আরও পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। কেননা, বিয়েবাড়িতে তো অনেকেই হাজির ছিলেন। প্রয়োজনে শহরে লকডাউন করা হোক।’’ পুরুলিয়া নাগরিক মঞ্চও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পুরুলিয়া শহরেবাসীর সুরক্ষার কথা ভেবে প্রশাসনকে ফের ‘লকডাউন’-এর জন্য অনুরোধ জানানো হবে।
শহরের জনবহুল চৌমাথা পোস্টঅফিস মোড় লাগোয়া দু’টি ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ রয়েছে। এই এলাকায় প্রচুর দোকানপাট থাকলেও ‘জ়োন’-এর আওতায় থাকা দোকানগুলি বন্ধ রয়েছে। সোমবার সরজমিনে এই এলাকা পরিদর্শনে যান জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম সওকত, মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া সদর) প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী। ছিলেন পুরুলিয়া সদর থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া পুরসভার বিদায়ী উপপুরপ্রধান বৈদ্যনাথ মণ্ডল প্রমুখ। তাঁরা পাশাপাশি থাকা তিনটি ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ই ঘুরে দেখেন। ‘জ়োন’ তিনটিকে ছুঁয়ে যাওয়া বা জ়োন লাগোয়া একাধিক রাস্তা রয়েছে। সেগুলির মধ্যে কয়েকটি খোলাও রয়েছে। সকাল থেকে প্রচুর মানুষের যাতায়াত থাকে এই রাস্তাগুলিতে। তাই সুরক্ষার স্বার্থে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ লাগোয়া এই এলাকায় যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত করার দাবিও উঠেছে।
জেলাশাসক এ দিন বলেন, ‘‘এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। ‘মাস্ক’ ব্যবহার বা সতর্কতা অবলম্বন, স্বাস্থ্যবিধি যা মানা দরকার, মেনে চলুন। আমরা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে গেলাম। পুরুলিয়া পুরএলাকায় এখনও পর্যন্ত তিন জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তিনটি কন্টেনমেন্ট জ়োন রয়েছে। কন্টেনমেন্ট জ়োনের এলাকা বাড়ানো দরকার কি না, তা নিয়ে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত হবে।’’ শহরে ‘লকডাউন’ জারির আবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োনে তো লকডাউন জারি রয়েইছে। এলাকা বাড়ানো হবে কি না, তা আমরা দেখছি।’’