ছবি: এএফপি।
কেন্দ্র ও রাজ্যের গ্রিন জ়োনে থাকা বীরভূমেও এ বার করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেল। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার অধীন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের মল্লারপুরের কিসান মান্ডিতে, সরকারি নিভৃতবাসে থাকা মুম্বই ফেরত এক মহিলা-সহ তিন জনের লালারসের নমুনায় করোনা পজ়িটিভ মিলেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, মানবিক কারণে ওই মহিলা এবং তাঁর পরিবারকে মুম্বই থেকে রাজ্যে আসতে দেওয়া হয়েছিল।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বীরভূমের ওই তিন জনের করোনা পজ়িটিভ হওয়ার রিপোর্ট এসেছে। এর পরেই বীরভূম প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। করোনা আক্রান্ত তিন জনকে শুক্রবার দুর্গাপুরের সনকায়, বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার কথা জেলা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরের কেউ কেউ স্বীকার করলেও সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চাননি।
পরিবার এবং নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, দেড় মাস আগে বছর পঞ্চাশের মহিলা ক্যানসার চিকিৎসার জন্য মুম্বই গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক ছেলে, বেয়াই ও বোন। লকডাউনের মধ্যেও তেরো দিন আগে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মুম্বই থেকে রওনা দেন। দিন তিনেক পরে গ্রামের বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা আপত্তি তোলেন। পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় ওই চার জনকে মল্লারপুরের সরকারি নিভৃতবাসে রাখা হয়। বুধবার তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার তিন জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্যানসার রোগী মহিলা ও তাঁর বেয়াইয়ের বাড়ি মল্লারপুরে। মহিলার বোনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞায়। ক্যানসার আক্রান্ত মহিলার ছেলের করোনা রিপোর্ট অবশ্য নেগেটিভ এসেছে।
সূত্রের খবর, তিন জনের রিপোর্ট করোনা পজ়িটিভ আসার পরে মল্লারপুরের কিসানমান্ডির নিভৃতবাসে থাকা বাকি ১৫ জনের লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই নিভৃতবাসে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ যাঁরা খাবারের জোগান দিয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি হচ্ছে। তাঁদের প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি তাঁদেরও কোয়রান্টিনে রাখা হবে। মুম্বই থেকে আসা অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরও সন্ধান করা হচ্ছে। যেহেতু করোনা আক্রান্তেরা নিভৃতবাসে ছিলেন, তাই আক্রান্তদের পরিবার বা গ্রামের কেউ তাঁদের সংস্পর্শে আসেননি। আপাতত এটাই জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্যকর্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে।