প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরে জেলাজুড়ে ব্যাপক হারে চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে মাস্ক ও হ্যাণ্ড স্যানিটাইজ়ারেরের। অভিযোগ, সেই সুযোগেকে হাতিয়ার করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দুটি পণ্যের কালোবাজারি শুরু করেছেন। সেই সম্ভাবনা রুখতে রবিবার জেলা জুড়ে অভিযানে নামল পুলিশ-প্রশাসন।
এ দিন জেলাসদর সিউড়ি, রামপুরহাট, রাজনগর, মহম্মদবাজার, বোলপুর-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মূলত ওষুধ ও স্টেশনারি দোকানগুলিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। সঙ্গী ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। দোকানে দোকানে গিয়ে তাঁরা খোঁজ নেন যে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে কি না। থাকলে কী দাম নেওয়া হচ্ছে। যদি না থাকে তাহলে কেন নেই। খতিয়ে দেখা হয়েছে দোকানের স্টকও।
জেলা জুড়ে এমন একটা অভিযান চলবে তেমন একটা আন্দাজ ছিলই। শুক্রবারই মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার-কে ৩০ জুন পর্যন্ত ‘অত্যাবশ্যক পণ্য’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, দু’টি পণ্য বেআইনি ভাবে মজুত করলে এবং নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি দামে বিক্রি করলে সাত বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা, দুই হতে পারে। এই দুই পণ্যের বেআইনি মজুতদারি চলছে কি না এবং অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে তা জানতে তৎপরতা শুরু হয়েছিল রাজ্যের তরফেও । কলকাতায় আগেই অভিযান চলেছে। জেলায় তারই প্রতিফলন দেখা দেল রবিবার।
কোথাও ডেপুটি পুলিশ সুপার, কোথাও আইসি, ওসি, বিডিওরা অভিযানে অংশ নেন। এদিন সিউড়ি, দুবরাজপুর, রাজনগর মহম্মদবাজারের অধিকাংশ ওষুধের দোকানেই অমিল ছিল মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার। শীঘ্রই সেগুলি দোকানে থাকবে এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে সঠিক দাম নেওয়া হবে কথা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সিউড়ি শহরে অভিযান চালানোর সময় এই বিষয়ে ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা জেলা জুড়েই এই অভিযান চালিয়েছি। সঠিক দাম নিতে বলেছি। একই সঙ্গে আমরা সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছি কেউ যদি হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক থাকা সত্ত্বেও বিক্রি না করেন তাহলে তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দিতে।
মহম্মদবাজার ব্লক প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে মহম্মদবাজার থানা এলাকার কাঁইজুলি, হাটতলা, প্যাটেলনগর ও আঙ্গারগড়িয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। বিডিও আশিস মণ্ডল ও ওসি মহম্মদ আলির নেতৃত্বে অভিযান চলে। বিডিও আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘মহম্মদবাজার, পটেলনগর ও আঙ্গারগড়িয়া এলাকায় প্রতিটি ওষুধের দোকানে অভিযান চালানো হল যাতে কালোবাজারি রোখা যায় ও মানুষ যাতে সঠিক দামে সঠিক জিনিস পান। করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা প্রচারও করা হয়।’’ সাঁইথিয়া থানার ওসি নীলোৎপল মিশ্রের নেতৃত্বে সাঁইথিয়ার শহরের যে সমস্ত ওষুধের দোকান রয়েছে সমস্ত দোকানে ন্যায্য দামে মাক্স ও ওষুধ বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বোলপুরের মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী, এসডিপিও অভিষেক রায়-সহ একাধিক পুলিশ কর্তারা মাক্স ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের কালোবাজারি রুখতে বিভিন্ন দোকানে দোকানে তল্লাশি অভিযান চালান।