সতর্ক: বৈঠকে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার। নিজস্ব চিত্র
মন্দির মসজিদ খোলা থাকছে। চলবে পুজো, নমাজ পড়া। কিন্তু, জনসমাগম বা পুণ্যার্থী ও ভক্তদের একত্রিত হওয়া রুখতে পদক্ষেপ করতে হবে মন্দির বা মসজিদ কমিটিগুলিকেই।
করোনাভাইরায়ের সংক্রমণ রুখতে দূরত্ব বজায় রাখার পরমার্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের তরফে নির্দেশিকাও জারি হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। বন্ধ ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, মিউজিয়াম, সিনেমাহল। কিন্তু ধর্মস্থলে জমায়েত আছেই। করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভয়ঙ্কর উৎকন্ঠার মধ্যে ধর্মীয় স্থলে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, সেটা নিয়েই মন্দির ও মসজিদ কমিটিগুলিকে পরামর্শ দিল বীরভূম জেলা প্রশাসন।
বুধবার জেলা পরিষদ সভাকক্ষে তারাপীঠ, নলাটেশ্বরী, বক্রেশ্বরের মতো বড় মন্দিরগুলির কমিটি, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং জেলার বিভিন্ন মসজিদ কমিটির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রশাসনিক কর্তারা ওই বার্তা দেন। ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সব্যসাচী সরকার, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ, তিন মহকুমাশাসক এবং স্বাস্থ্য কর্তারা।
বৈঠকে প্রত্যেক কমিটিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মন্দির বা মসজিদে আগত মানুষ জনের মধ্যে যাতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় থাকে, তাঁরা যাতে একত্রিত হয়ে না দাঁড়ান, সেটা দেখতে হবে। একের সঙ্গে অন্যের দূরত্ব যাতে কমপক্ষে ১ মিটার থাকে, সেটা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দেখতে হবে মন্দির বা মসজিদ কমিটিকেই। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তরফে যাঁরা এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সভায় প্রবেশের আগে তাঁদের প্রত্যেকের হাতে স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। করোনা সংক্রমণ রুখতে যা অত্যন্ত জরুরি পাঠ।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, মন্দির ও মসজিদে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। মন্দিরগুলির তরফে ‘লাইন ম্যানেজমেন্ট’ করতে হবে। একের সঙ্গে অন্যের ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পুজো চলবে কিন্তু যেমন ভান্ডারা থাকে, সেগুলি আপাতত বন্ধ থাকবে। জেলাশাসকের কথায়, ‘‘তারাপীঠ, বক্রেশ্বর, নলাটেশ্বরী মন্দির কমিটি এবং মসজিদ কমিটিগুলি ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবে ও সকলের স্বার্থে নির্দেশ মানবে বলে কথা দিয়েছে।’’
তারাপীঠ মন্দির কমিটির তরফে তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনা-আতঙ্কে এখন মন্দিরে ভিড় অনেক কম। তবে যাঁরা আসছেন, তাঁরা পুজো দেবেন। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে এক জায়গায় যাতে লোক না দাঁড়ায়, সঠিক ভাবে ও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে পুণ্যার্থীদের লাইন হয়, সেটা আমরা নিরাপত্তারক্ষী ও মাইকিং করে নিয়ন্ত্রণ করব। বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যক্যাম্পও করা হচ্ছে।’’ অন্য দিকে সিউড়ি মাদ্রাসার তরফে জিয়াউল ইসলাম বলছেন, ‘‘ভিড় জমতে না দেওয়া, নমাজের সময়ে পরস্পরের মধ্যে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছেন প্রশাসনের কর্তারা। আমরা সেটা মেনে চলব। নজর দেব পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিতেও।’’