লাইনে: রামপুরহাট হাসপাতালে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
শরীরে হালকা জ্বর জ্বর ভাব। গা হাত-পা ব্যথা। মাথা ব্যথা। তাতেই আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে। শরীরে করোনাভাইরাস ঢুকেছে কি না তা জানতেই ভিড় বাড়ছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেই ভিড় সামাল দিতেই সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৬টে পর্যন্ত বর্হিবিভাগ খোলা রাখতে হল।
যখন প্রশাসনের তরফে বারবার বলা হচ্ছে অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে না যেতে, তখন এমন ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ আচরণে বাসিন্দাদের দায়িত্ববোধ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার কাম ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘এত সতর্কতা করা সত্ত্বেও এই অপ্রয়োজনীয় ভিড়ে হাসপাতাল চত্বরই সংক্রমণ ছড়ানোর কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এ ব্যাপারে মানুষ নিজেরা যদি সতর্ক না হন তাহলে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা মুশকিল।’’
সোমবার এমন চিত্রই ছিল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ৮০০ জন জ্বর-জ্বালার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে আসা আত্মীয় পরিজন পড়শিরাও ভিড় করেছেন হাসপাতালে। সোমবার সকালেও প্রায় ৪০০ জন বর্হিবিভাগে কেবলমাত্র জ্বরের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসেন। তাদের সঙ্গেও আত্মীয় পরিজন পড়শিরাও ভিড় করেন হাসপাতালে।
সুজয়বাবু জানান, অযথা আতঙ্কে কেবলমাত্র জ্বর যাদের আছে এমন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্থানীয়রা। অথচ এদের মধ্যে কেউ কেউ বিদেশ থেকে ফেরেননি বা করোনাভাইরাস আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে আসেননি। তাঁরাও ভিড় করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যেখানে ভিড় এড়াতে বলা হচ্ছে অকারণে হাসপাতালে আত্মীয়দের নিয়ে অনেকেই ভিড় করছেন।”
সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট— এই সমস্ত উপসর্গ থাকা রোগীদের করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত সন্দেহজনক রোগীদের জন্য ছয় শয্যার পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোলা হয়েছে। সম্প্রতি হাসপাতালে কেবলমাত্র জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের পৃথক চিকিৎসার জন্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক পৃথক ভাবে ১২টি করে মোট ২৪টি শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, ওই দুটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে কেবলমাত্র জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।