গান্ধী পুণ্যাহে ছাতিমতলা। নিজস্ব সংবাদদাতা শান্তিনিকেতন নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বছরের মতো এ বারও ১০ মার্চ বিশ্বভারতীতে ‘গান্ধী পুণ্যাহ’ পালন করা হল। তবে সেই অনুষ্ঠানে কর্মী, শিক্ষকদের উপস্থিতির হার অত্যন্ত কম ছিল বলে অভিযোগ। এমনকি, এ দিনে ঐতিহ্য মেনে ছাতিমতলাও সাফ করা হয় না বলেও অভিযোগ। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিশ্বভারতীর একাংশ। এর আগে কোনও গান্ধী পুণ্যাহে এমন হয়নি বলে অভিযোগ প্রাক্তনী, আশ্রমিকদের একাংশের।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, ১৯১৫ সালে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন। রবীন্দ্র-জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের অনুমোদন পাইয়া ছাত্ররা (১০ মার্চ ১৯১৫) স্বেচ্ছাব্রতী হইয়া আশ্রমের সকল প্রকার কর্ম করিবার দায় গ্রহণ করিল—রান্না করা, জল তোলা, বাসন মাজা, ঝাড়ু দেওয়া, এমন কি মেথরের কাজ পর্যন্ত। অধ্যাপকদের মধ্যে সন্তোষচন্দ্র মজুমদার, অ্যান্ড্রুজ, পিয়ার্সন, নেপালচন্দ্র রায়, অসিত-কুমার হালদার, অক্ষয়চন্দ্র রায়, প্রমদা রঞ্জন ঘোষ ও জীবনী লেখক প্রভৃতি অনেকেই সেদিন সহযোগিতা করিয়াছিলেন।’’ তার পর থেকেই প্রতি বছর ১০ মার্চ দিনটি ‘গান্ধী পুণ্যাহ’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে বিশ্বভারতীতে।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, গত বছরও দিনটি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে উদ্যাপন করার জন্য বিশ্বভারতীর তরফে আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সকলকে জানানো হয়েছিল। এ বারও ৭ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তবে বেশ কয়েকটি ভবনে গান্ধী পুণ্যাহ পালন হলেও সেখানে কর্মী, শিক্ষকদের উপস্থিতি হাতে গোনা ছিল বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, এ দিন ছাতিমতলা পরিষ্কারের কোনও রকম উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলেও অভিযোগ। এ নিয়ে প্রবীণ আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “গান্ধীজি চেয়েছিলেন পঠনপাঠনের সঙ্গে সকলের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা তৈরি হওয়া। সে জন্য আজও বিশ্বভারতীতে দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালন করা হয়। তবে এ বছর কেন নমো নমো করে দিনটিকে পালন হল না তা অনুসন্ধান হওয়া উচিত।” আর এক আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিশ্বভারতী চিন্তার পরিবর্তন করেছে মনে হচ্ছে। এটি বড় লজ্জার। আমার যখন ছাত্র, কর্মী ছিলাম তখন এই গান্ধী পুণ্যাহকে বিশেষ ভাবে পালন করতাম। এতে আমরা খুবই দুঃখিত।”
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক শিক্ষক সূর্যকুমার শইকিয়া বলেন, “অধিকাংশ বিভাগে গান্ধী পুণ্যাহ পালন হয়েছে। তবে সেখানে কারা উপস্থিত ছিলেন, কারা ছিলেন না, সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না।”