ভোটের প্রচারে। ছবি: দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
ভোটের ময়দানে এ বারে বাহাদুরের ‘বাহাদুরি’ আর দেখা যাবে না। যা নিয়ে আক্ষেপ ঝরে পড়ছে ঝালদা এলাকার পুরনো দিনের কংগ্রেস কর্মীদের একাংশের। সেই ১৯৭৮ সাল থেকে টানা ভোটে দাঁড়ানোর ধারাবাহিকতায় এ বারে ছেদ পড়ল যে। ঝালদার বিশরিয়া গ্রামের বাহাদুর মাহাতোর জায়গায় তাঁর বৌমা সীমাকে এ বারে প্রার্থী করেছে দল। তবে যাবতীয় চর্চা চলছে ৭১ বছর বয়সী বাহাদুরকে নিয়েই।
সময়টা ১৯৭৮ সাল। কলেজ রাজনীতি থেকে সরাসরি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখা বছর সাতাশের বাহাদুরের উপরে সে বারে ভরসা রাখতে পারেনি দল। অভিমানী বাহাদুর নির্দলের প্রতীকে লড়ে কংগ্রেসের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী লক্ষ্মণ মাহাতোকে হারান। তবে ফেরেন কংগ্রেসেই। তার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ৮৩-র ভোটে জয়। ১৯৮৮-তে জিতে ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পান। ৯৩-এ জয়ের পরে কিছু দিনের জন্য ফের সভাপতির দায়িত্ব সামলাতে হয় তাঁকে।
১৯৯৮-এ জেলাপরিষদে অল্প ভোটে হারার পরে ২০০৩ সালে মূলত তাঁরই নেতৃত্বে বিরোধীশূন্য হয় ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতি। ফের বসেন সভাপতির চেয়ারে। ২০০৮-এ চেনা আসন সংরক্ষণের গেরোয় পড়লেও অন্য আসনে দাঁড়িয়েও বাজিমাত করেন। ২০১৩-য় জেলা পরিষদের আসনে ফের জিতে বিরোধী দলনেতার পদ সামলান। গত বার অল্প ভোটে হেরে গেলেও দলীয় ভাবে ঝালদা ১ এর ব্লক সভাপতির পদ সামলাতে হয়েছে তাঁকে।
ভোটের ময়দানে সরাসরি থাকতে না পেরে মন খারাপ বাহাদুরেরও। দুঁদে ওই রাজনীতিকের কথায়, “বয়স হয়েছে। ভোটে অনেক ধকল থাকে। শরীরও সায় দেয় না। নতুনদেরও তো সুযোগ দিতে হবে।” প্রার্থী, তাঁর বৌমা সীমা বলেন, “রাজনীতিতে সে ভাবে অভিজ্ঞতা নেই। শ্বশুরমশাই-ই বড় ভরসা।”
বিরোধী দলগুলি বাহাদুরের ভোটের ময়দান থেকে সরে যাওয়া নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও কংগ্রেস জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, “রাজনীতিতে উনি বর্ণময় চরিত্র। মিষ্টভাষী, অল্প কথার ও ঠান্ডা মাথার এমন লোক রাজনীতিতে কমই দেখা যায়। উনি না থাকলেও ওঁর অভিজ্ঞতায় ওই আসনেআমরা জিতব।”