প্রতীকী ছবি।
প্রতিবাদের কর্মসূচিতেও তৃণমূলের ‘গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব’ নিয়ে জল্পনা শুরু হল পুরুলিয়ার জয়পুরে।
উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে এবং কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতা করে রবিবার জয়পুর বাজারে মিছিল করে ব্লক যুব তৃণমূল। সামনের সারিতে ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা বর্তমানে দলের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সহসভাপতি কীর্তন মাহাতো, ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি দিব্যজ্যোতি প্রসাদ সিংহ দেও।
মিছিল শেষে আরবিবি স্কুলের কাছে, পুরুলিয়া-রাঁচী রাস্তার ধারের একটি ময়দানে প্রতিবাদসভা হয়। মঞ্চ থেকে কীর্তনবাবু বলেন, ‘‘দলে কিছু বেনোজল ঢুকেছে। তাদের থেকে কর্মীদের সাবধান থাকতে হবে। পুরোনো কর্মীদের সম্মান দিতে হবে।’’
জয়পুর ব্লক তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি শঙ্করনারায়ণ সিংহ দেও এ দিনের মিছিলে ছিলেন না। পথসভার শেষে জয়পুরের তৃণমূল বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি কেন এলেন না, সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’’ শঙ্করনারায়ণবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও কর্মসূচির ব্যাপারে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। যতদূর জানি, জেলা কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করেই ওই কর্মসূচি হয়েছে।’’
জয়পুরে দীর্ঘ দিন তৃণমূলের কোনও ব্লক সভাপতি ছিল না। দলের বর্তমান জেলা চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো কাজকর্ম দেখতেন। জেলা জুড়ে ব্লক কমিটি ঢেলে সাজানোর চিন্তাভাবনা শুরুর পরেই নতুন করে ডামাডোল শুরু হয়। গত ৩১ অগস্ট জেলা তৃণমূল সভাপতি গুরুপদ টুডুকে একটি চিঠি পাঠান জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির কিছু তৃণমূল সদস্য। দাবি করেন, এক সময়ের ব্লক সভাপতি কীর্তন মাহাতোকে আবার দায়িত্ব দিতে হবে। নতুন দলে আসা কাউকে ব্লক সভাপতির পদে মেনে নেওয়া হবে না।
ওই চিঠির আগের দিন, ৩০ অগস্ট জয়পুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি চঞ্চল মৈত্র ও জয়পুর রাজ পরিবারের সদস্য তথা বিজেপি নেতা শঙ্করনারায়ণ সিংহ দেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ব্লক কমিটির সভাপতিদের তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, জয়পুরের দায়িত্ব পেয়েছেন শঙ্করনারায়ণবাবু।
তার পর থেকে তৃণমূলের প্রায় কোনও কর্মসূচিতেই শঙ্করনারায়ণবাবু ও কীর্তনবাবু বা তাঁদের অনুগামীদের একসঙ্গে দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছেন দলের নিচুতলার কর্মীরা। কিছু দিন আগেই জয়পুরের রাসময়দানে তৃণমূলের সভায় শঙ্করনারায়ণবাবু থাকলেও ধারে-কাছে ছিলেন না কীর্তনবাবু।
এ দিন তৃণমূলের প্রতিবাদসভার মঞ্চে ছিলেন জেলা যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা হলধর মাহাতো, জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য মেঘদূত মাহাতো প্রমুখ। কীর্তনবাবু ও শঙ্করনারায়ণবাবুর মন্তব্য প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে আমার জানা নেই। এ বিষয়ে দলীয় স্তরে খোঁজ নিয়ে দেখে মন্তব্য করব।’’