রামপুরহাট আদালত চত্বরে আনারুল। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
বগটুই-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের পলিগ্রাফ টেস্টের শুনানি আরও এক বার রামপুরহাট আদালতে বিচারাধীন থাকল। বুধবার রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে আনারুল হোসেনের পলিগ্রাফ টেস্টের বিষয়ে কোনও রকম শুনানি হয়নি। পাশাপাশি আনারুলকে প্রথম শ্রেণির বন্দি হিসেবে গ্রাহ্য করার যে আবেদন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী, তা এ দিন আদালত খারিজ করেছে। এ দিন আনারুল-সহ ধৃত ২৪ জনের জামিনের আবেদনও নাকচ করেছেন এসিজেএম। এ দিনও আদালতে প্রবেশ করার আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেকে নির্দোষ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে দাবি করেন ধৃত তৃণমূল নেতা।
আনারুলের যে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা, সেটি নিয়ে শেষ শুনানিতে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এপ্রিলের শেষ শুনানিতে আনারুলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এজলাসে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর মক্কেলের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করার কথা আদালতকে সিবিআই জানায়নি। ‘সিজার লিস্ট’ও জমা দেয়নি। অনির্বাণের দাবি, এ দিন লিখিত ভাবে সিবিআই বিচারককে জানায়, মোবাইল বাজেয়াপ্তের কথা তারা এক মাস পরে আদালতকে জানিয়েছে।
অনির্বাণের বক্তব্য, ‘‘আনারুলের মোবাইল সিবিআই হেফাজতে নিয়েছিল ২৯ মার্চ। আর আদালতে সে কথা জানানো হয়েছে ২৯ এপ্রিল। এ ক্ষেত্রে সিবিআই আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আইনসঙ্গত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’ পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ ছাড়া সিবিআই যে-ভাবে নিজেদের হেফাজতে এত দিন আনারুলের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল রেখে দিয়েছে, তাতে ‘মোবাইল ট্যাম্পারিং’ করা হতে পারে বলে ওই দিন আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন আনারুলের আইনজীবী।
অন্য দিকে, আদালত সূত্রে জানা যায়, আনারুল হোসেনের বাজেয়াপ্ত মোবাইল জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও রকম ‘আইন লঙ্ঘন’ করা হয়নি বলে এ দিন দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। এ প্রসঙ্গে এ দিন বিচারকের কাছে সিবিআইয়ের আইনজীবী এলাহাবাদ হাই কোর্টের একটি মামলার রায় তুলে ধরেন। সিবিআইয়ের সওয়ালের জবাবে আনারুলের আইনজীবী বিচারকের কাছে আবেদন করেন, এলাহাবাদ হাই কোর্টের মামলার রায়ের ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তাঁরা আদালতে জমা দেবেন। পলিগ্রাফ টেস্ট, মোবাইল বাজেয়াপ্ত এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এই তিনটি শুনানি আগামী ১৮ মে হবে বলে জানান আনারুলের আইনজীবী।
ধৃত তৃণমূল নেতা প্রথম শ্রেণির বন্দির (ডিভিশন ১) মর্যাদা পেতে পারেন কি না, এ দিন আনারুলের আইনজীবীর করা সেই আবেদনেরও শুনানি হয় এসিজেএম আদালতে। আনারুলের সামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে সিবিআইকে অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। অনির্বাণ এ দিন সওয়াল করেন, সিবিআই ওই কাজ না করে নিজেদের মতামত জানানোর চেষ্টা করেছে। যদিও দু’তরফের সওয়ালজবাব শোনার পরে আনারুলকে প্রথম শ্রেণির বন্দি করা যাবে না হলে জানিয়ে দেয় আদালত।