—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তিন দিনের কর্মসূচিতে বোলপুর শান্তিনিকেতনে আসছেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। তবে, তাঁর সফর উপলক্ষে ‘ব্রাহ্ম’ বিশ্বভারতীর চত্বরে পোস্টার দেওয়া এবং শঙ্করাচার্যের থাকার জন্য বিশ্বভারতীর অতিথি নিবাস বুক করাকে ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য আসা ‘অতিথিদের’ অতিথি নিবাস বুক করতে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল। বিশ্বভারতী অবশ্য জানিয়েছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার জন্য অতিথি নিবাস দেওয়া হয়নি।
এর আগে বিশ্বভারতী দেওয়ালে পদ্মফুল আঁকা থেকে শুরু করে ‘রাম নারায়ণ রাম’ লেখা নিয়েও দেখা গিয়েছে বিতর্ক। এ বার পুরীর শঙ্করাচার্যের সফর ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে দেওয়াল থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী তিনপাহাড়, তালধ্বজ, আশ্রম চত্বর-সহ বিশ্বভারতীর একাধিক দেওয়ালে শঙ্ককরাচার্যের ছবি সংবলিত পোস্টার লাগানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধরণীতে শ্রীমদজগৎগুরু পুরী পিঠাধীশ্বর শঙ্কারাচার্য মহারাজের রাষ্ট্রোৎকর্ষ সম্মেলন’ তথা দীক্ষা দানের অনুষ্ঠান ৫-৭ জুন পর্যন্ত চলবে বোলপুর গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে’।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের অনুমতিতেই বিশ্বভারতীর অতিথি নিবাস রতনকুটিরে পুরীর শঙ্করাচার্য ও তাঁর শিষ্যদের থাকার জন্য একাধিক ঘর নেওয়া হয়েছে। যা বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলে মনে করছেন অনেকেই। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পোস্টার লাগাতে দেওয়া এবং বিশ্বভারতীর অতিথি নিবাস বুক করার অনুমতি দেওয়াকে ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই। বিশ্বভারতীর কর্মী, অধ্যাপকদের একাংশের কথায়, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আগে বিশ্বভারতীতে ঘটেনি। বিশ্বভারতীতে পৌত্তলিকতার কোনও স্থান নেই। কিন্তু, দিন দিন সমস্ত ধরনের ঐতিহ্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে।” আশ্রমিক তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী ব্রহ্ম উপাসনার জায়গা। এখানে বিশেষ ধর্মের উপাসনা হয় না। সুতরাং এক জন বিশেষ ধর্মীয় ব্যক্তির আসাকে কেন্দ্র করে পোস্টার কিংবা অতিথি নিবাস বুকিংয়ের অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়নি। এটা আমাদের প্রথা নয়।’’ প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীতে এমন আগে হয়নি। এটি বেদনাদায়ক।’’
যদিও বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো জানিয়েছেন, বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য কাউকে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আয়োজকেরা টাকা দিয়ে অতিথি নিবাস বুক করেছেন। ক্যাম্পাস চত্বরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পোস্টার লাগানো হয়ে থাকলে খুলে ফেলা হবে।’’