ফাইল চিত্র
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য থাকাকালীন একটি কর্মসমিতির বৈঠকের গৃহীত সিদ্ধান্ত বিকৃত করার অভিযোগ ছিল সবুজকলি সেনের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তখনই কর্মসমিতির বর্তমান সদস্য দুলালচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিটি গড়া হয়। তাঁর জমা দেওয়া রিপোর্টে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দিকে আঙুল তোলা হয়েছিল।
সেই রিপোর্টকে সামনে রেখে সবুজকলিদেবীর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ফের এক সদস্যের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতীর কর্মসমিতি।
বুধবারের বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কর্মসমিতির এক সদস্য বলেন, “এক প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়ে এক সদস্যের কমিটি তৈরি হবে, যিনি এই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।” এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনের অধিকর্তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়ঃজ্যেষ্ঠ হওয়ার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পান। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অধিকর্তা হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী উপাচার্য পদে থাকতে হলে কর্মসমিতির পক্ষ থেকে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করতেই হত। কিন্তু, কর্মসমিতি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বৈঠকে অধিকর্তা হিসেবে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব খারিজ করে দেয়।
প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং বিশ্বভারতীর আরও তিন জন আধিকারিক কর্মসমিতির সিদ্ধান্তকে ‘বিকৃত করে’ নিজের মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। কর্মসমিতির সেই সিদ্ধান্তের উপরে ভিত্তি করেই কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সবুজকলিদেবীকে ২০১৮-র নভেম্বর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদে বহাল রাখে।
বুধবারের কর্মসমিতির বৈঠকের সিদ্ধান্তের দিকে নজর ছিল সব পক্ষেরই। কারণ, এ দিন সবুজকলি সেনের বিষয়টির পাশাপাশি ভাষাভবনের তিন প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। এই তিন জন প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এ দিন একটি পৃথক কমিটি তৈরি করা হয়। কর্মসমিতির সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ফলে সবুজকলি সেন এবং অন্যদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির নিষ্পত্তির ব্যাপারে আরও খানিকটা এগিয়ে যাওয়া গেল।”
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে অন্তত চার জনের বয়স ৬৫-র ঊর্ধ্বে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের কোনও রকম সভা, জমায়েতে যোগ দেওয়া উচিত নয়— এই মর্মে এ দিনের বৈঠক বাতিলের অনুরোধ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তথা পরিদর্শক রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী তথা আচার্য নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে চিঠি দিয়েছিলেন কর্মসমিতির রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য সুজিতকুমার ঘোষ। তিনি নিজেও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না।