সকাল সাড়ে সাতটাতেও বড়জোড়ার রাস্তা ছিল কুয়াশায় মোড়া। দুর্ঘটনায় গাড়ি (ইনসেটে)। ছবি: তারাশঙ্কর গুপ্ত
পরপর ধাক্কা মেরে রাস্তায় থমকে দাঁড়াল ছ’টি গাড়ি। দুই শিশু-সহ মোট আট জন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার হাটআশুরিয়া মোড়ের কাছে, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কে। এক শিশু-সহ দু’জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানায় পুলিশ। তাঁদের চিকিৎসা চলছে বাঁকুড়া মেডিক্যালে। ঘন কুয়াশা থাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে অনুমান করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ প্রথমে ওই রাস্তায় দু’টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এর পরেই বাঁকুড়াগামী একটি সরকারি বাস দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে যায়। ওই বাসের পিছনে ছিল একটি বেসরকারি বাস। তার পিছনে ছিল দু’টি ট্রাক। পরপর ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়িগুলি। আহতদের চিৎকারে সেখানে ছুটে আসান স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুলিশ কর্মীদের সাহায্যে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তাঁদের বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অলক মুখোপাধ্যায় জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন ওই যুবকেরা।
দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পেয়েছে প্রদ্যুৎ কাওয়ালি নামে দুর্গাপুরের ইছাপুরের বাসিন্দা এক বালক এবং তার মা বিজলি কাওয়ালি-সহ আট জন। প্রদ্যুৎ এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি ট্রাকের চালক ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আব্দুল হালিম আনসারিকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানো হয়। বিজলাদেবী তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে বাঁকুড়া যাচ্ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন মায়াবাজারের বাসিন্দা শিবু চন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্গাপুর থেকে মানবাজার যাচ্ছিলাম। বাড়ি থেকে বেরিয়েই দেখি রাস্তায় ঘন কুয়াশা। এক হাত দূরের জিনিস দেখা যাচ্ছিল না। কুয়াশা এবং যানজটের কারণে খুব ধীরে আসছিল বাসটি। কিন্তু বড়জোড়া অতিক্রম করার পরে গতি বাড়ান চালক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কিছু ক্ষণের মধ্যে হঠাৎ জোরে ব্রেক কষার আওয়াজ আসে। কয়েকজন পড়ে যাই। বাঁ চোখের নীচে ও পায়ে চোট লেগেছে।’’
দুর্ঘটনায় অন্য আহতেরা হলেন, বড়জোড়ার পখান্নার চকাই গ্রামের বাসিন্দা সুরালু খাতুন এবং সুফিয়া বিবি, বড়জোড়ার ভুষতড়ার বাসিন্দা ময়না আখুলি এবং গলসির বাসিন্দা অনুপ ভট্টাচার্য (৪৮)।
আহত ময়নাদেবীর দাবি, রাস্তায় ঘন কুয়াশা থাকলেও জোরে বাস চালাচ্ছিলেন চালক। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। চোখে আঘাত পেয়েছেন ময়না। স্থানীয় বাসিন্দা অজয় পাল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কে।