কয়লা বোঝাই। নিজস্ব চিত্র
খয়রাশোল থেকে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পৌঁছতে দীর্ঘদিন দিন ধরে অব্যবহৃত রেলপথ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য বিদযুৎ উন্নয়ন নিগম (পিডিসিএল)। প্রশাসনের অনুমতি মিলতেই এ বার খয়রাশোলের দু’টি খোলামুখ খনি থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পৌঁছতে দীর্ঘদিন দিন ধরে অব্যবহৃত রেলপথকে কাজে লাগানো শুরু হল।
বুধবার কড়া পুলিশি পাহারায়, খয়রাশোলের হজরতপুর সাইডিং থেকে প্রথম কয়লা বোঝাই মালগাড়িটি রওনা দিল। স্থানীয় তিন থানার ওসি, সিআই পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশকর্মীর সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) এবং ডেপুটি পুলিশ সুপার( হেডকোয়ার্টার)। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় স্বস্তিতে পিডিসিএল কর্তারা। খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর, বড়জোড় ও গঙ্গারামপুর চক— এই দুই খোলামুখ খনি থেকে কয়লা বহনের জন্য বছর পাঁচেক আগের মতো ভীমগড়-পলাস্থলী বন্ধ রেলপথের কাজে লাগাতে চেয়ে পিডিসিএল আবেদন করেছে বেশ কিছু দিন ধরে। কিন্তু, স্পর্শকাতর এবং শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা থাকায় অনুমতি দিতে সময় নিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতি বিচার করে শেষ পর্যন্ত সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের আগে একটি বেসরকারি সংস্থা খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর-বড়জোড় এবং গঙ্গারামচক নামক দুটি খোলামুখ কয়লাখনির দায়িত্বে ছিল। তখন ভীমগড়- পলাস্থলী বন্ধ থাকা রেলপথের মধ্যে থাকা একটি অংশ কয়লা বহনের জন্য ব্যবহৃত হত। কয়লা হজরতপুর সাইডিং থেকেই মালগাড়িতে লোড হত। কিন্তু কয়লা চুরি ও নানা শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার জন্য ’১৫ সালে কোলব্লক ওই সংস্থার হাত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পিডিসিএলকে। তার পর থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পৌঁছনো হচ্ছিল সড়কপথে ডাম্পারে করে। কিন্তু শয়ে শয়ে কয়লা বোঝাই লরি-ডাম্পার চলায় রাস্তার অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। সপ্তাহ দুই আগে যাতায়াতের মূল রাস্তায় খয়রাশোলের নওপড়ার কাছে একটি সেতু বসে যাওয়ায় কয়লা বহন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই রেলপথে কয়লা বহনের অনুমোজন চায় পিডিসিএল। তাতেই সিলমোহর দেল প্রশাসন। পিডিসিএলের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘রেলপথ চালু হওয়ায় সমস্যা মিটে যাবে।’’
কিন্তু, মালগাড়িতে কয়লা গেলে আগের মতো কয়লা চুরি বা আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হয় কিনা সেটা নিয়ে চিন্তা থাকছেই।